জর্জিয়া, নিউজার্সি, নিউ হ্যামশায়ার এবং নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামান্টে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত রেজ্যুলেশন, ঘোষণাপত্র এবং প্রক্লেশেনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানানো হলো শুক্রবার সম্মিলিত এক ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে।
যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটান্স’, স্যাফেস্ট, বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমক্র্যাটিক ফ্রন্ট, আমেরিকা-বাংলাদেশ এলায়েন্সসহ ১২টি সংগঠনের সম্মিলিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ।
সঞ্চালনা করেন ডেমক্র্যাট ফাহাদ সোলায়মান এবং খ্যাতনামা উপস্থাপক ফাতেমা সাহাব রুমা।
বহ্নিশিখা সংগীত নিকেতনের প্রধান সবিতা দাস, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা উইলি নন্দির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের পর বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত একটি গান পরিবেশিত হয়। এছাড়া ছোট্টমণি ফাসির কবীর কাব্য কর্তৃক শামসুর রাহমানের বিখ্যাত একটি কবিতা আবৃত্তি ও স্বাধীনতা দিবসের আলোকে নৃত্য পরিবেশনের পর নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মনোয়ার হোসেন, ফোবানার চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী, স্যাফেস্ট’র প্রধান নির্বাহী মাজেদা এ উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, কুইন্স এ্যাসেম্বলী ডিস্ট্রিক্ট-৩৮ এর ডেমক্র্যাট-লিডার মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টের ৫ এ্যাসেম্বলিম্যান জেনিফার রাজকুমার, আলিসিয়া হাইন্ডম্যান, ক্যাটালিনা ক্রুজ, ডেভিড ওয়েপ্রিন ও ক্যারিনা রীইজ এবং দুই সিনেটর জেসিকা র্যামোজ ও এনা ক্যাপলেন নিজ নিজ বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রশংসা করে বলেন, এমন নিষ্ঠাবান ও মেধাবি মানুষের কারণেই নিউইয়র্ক তথা আমেরিকা আজ গোটাবিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এমন মানুষদের জন্মভূমির ব্যাপারে আমাদের আগ্রহ আর কৌতুহলের সীমা-পরিসীমা নেই। আমরা বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করি না। এ ধরনের মতামত/মন্তব্য পোষণ করেই তারা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সকলকে অভিনন্দন জানান। উল্লেখ্য, এসব সিনেটর আর এ্যাসেম্বলীম্যানের নেতৃত্বেই নিউইয়র্ক পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে দুটি রেজ্যুলেশন পাশ হয়েছে।
এর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নিউজার্সি, নিউ হ্যামশায়ার স্টেট, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জর্জিয়া স্টেট পার্লামেন্ট সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তার কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে অদম্য গতিতে হাঁটছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টের রেজুলেশনে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে আসছে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘মুজিব বর্ষ’ পালনকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় এবং বলা হয়, এই স্টেটের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী আমরাও এই উদযাপনে গৌরববোধ করছি।
আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে একটি গণতন্ত্র, সহিষ্ণুতা ও বহুত্ববাদী দেশের আন্তর্জাতিক মডেল হিসেবে মনে করে এবং সে দেশের বন্ধুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
আরো বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের পরিণত হয়েছে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘সোনার বাংলা’ স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় আসীন হতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দিপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছে।’
‘মার্চ মাসটি নানা কারণে বাংলাদেশি আমেরিকানদের জন্যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, ১৭ মার্চ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। অধিকন্তু ২৬ মার্চ হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এবং এবার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হচ্ছে’-উল্লেখ করা হয়েছে রেজ্যুলেশনে। এসব কারণে ঐতিহ্যবাহী এই স্টেটের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যেকার সম্প্রীতির বন্ধকে শক্তিশালী, জোরদার করতে প্রেরণা জোগায়। আর এভাবেই মানুষের জীবনমানে বৈচিত্র আসে। এসব কারণেই এই সংস্থা অত্যন্ত গৌরবের সাথে স্বীকার করছে বাংলাদেশীদের অবদানের কথা এবং সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভ কামনা করা হয়েছে রেজ্যুলেশনে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকেই নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রেজ্যুলেশন পাশ করা হলেও এই প্রথম বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামোল্লেখ করা হলো এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে বাংলাদেশ-এ কথাও সগৌরবে উচ্চারিত হয়েছে।
স্বাধীনতা দিবসের এ অনুষ্ঠানে আরো যোগদান করেন নিউ অর্লিন্স ভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোস্তফা সারোয়ার, আমেরিকা-বাংলাদেশ এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট এম এ সালাম, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির চেয়ারম্যান আলিম খান আকাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লিয়াকত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আওয়াল মিয়া প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন