আগামী ৭ মে' কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে কানাডার ক্যালগেরিতে প্রবাসীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে 'আজ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথ' সংগীত সন্ধ্যা। বিশেষ এই দিনের আয়োজনকে স্মরণীয় ও সাফল্যমন্ডিত করতে আয়োজকদের উদ্যোগে ক্যালগেরি শহরের অদূরে রকিভিউ কাউন্টির 'সীমানা পেরিয়ে'তে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন সাইফুল ইসলাম রিপন, খায়ের খোন্দকার রুবেল, তীর্থ সাহা, রীতা কর্মকার এবং মো. মাহমুদ হাসান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের গ্রান্ড স্পন্সর ইকবাল রহমান এবং মিডিয়া পার্টনার আলবার্টার প্রথম বাংলা অনলাইন পোর্টাল 'প্রবাস বাংলা ভয়েস' এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল।
সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠান সূচি ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অনুষ্ঠানের সংগঠক খায়ের খোন্দকার রুবেল। তিনি বলেন, বহুরূপী প্রতিভার অধিকারী একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগামী ৭ই মে ১৬১ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে করোনাত্তর পরিবেশে এ বছর আমরা ভিন্ন এক আমেজে সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করেছি। আর এতে সংগীত পরিবেশন করবেন ক্যালগেরির দুজন প্রথিতযশা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী যথাক্রমে তীর্থ সাহা ও রিতা কর্মকার। আশা করি তাদের অনবদ্য সঙ্গীত পরিবেশনায় ফুটে উঠবে বাংলার রূপ প্রকৃতি ভালোবাসা ও নির্মল আনন্দ।
অনুষ্ঠানের অন্যতম সংগঠক সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই বিশ্বের একমাত্র কবি , যার রচনাগুলি দুটি দেশের জাতীয় সংগীত – ভারতের জাতীয় সংগীত ‘জন গণ মন’ এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’।বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর বিশাল সাহিত্য কীর্তির জন্য তিনি আজীবন আমাদের রক্তস্রোতে আজও মিশে আছেন।
প্রথিতযশা শিল্পী তীর্থ সাহা বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘হে নূতন’ গানে চির নতুনের মধ্যে দিয়ে নিজের পৃথিবীকে আগমনের শুভক্ষণকে ব্যক্ত করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন/সূর্যের মতন।/রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন।/উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে/মোর চিত্তমাঝে/চির-নূতনেরে দিল ডাক/পঁচিশে বৈশাখ।’
প্রথিতযশা শিল্পী রীতা কর্মকার বলেন, বিশ্বের দরবারে বাঙালিদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেও শিখিয়েছেন কবিগুরু। যার কারণে বাঙালির অস্তিত্বে মিশে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তা জাগানিয়া লেখায় এমনকি চিত্রকলায়ও রবীন্দ্রনাথ চিরনবীন। আগামী ৭ মে আমরা তুলে ধরব তার সৃজনশীলতা। আসুন সবাই উপভোগ করি এই অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের গ্রান্ড স্পন্সর বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ইকবাল রহমান বলেন, রবী ঠাকুরের জন্ম জয়ন্তীর মতো এমন প্রগতিশীল ও সৃজনশীল কাজের সাথে সংযুক্ত হতে পেরে ইকবাল রিয়েল এস্টেট গর্বিত। ভবিষ্যতেও এমন সৃষ্টিশীল যে কোন কর্মকান্ডে ইকবাল রিয়েল এস্টেট কমিউনিটির পাশে থাকবে।
লেখক, কলামিস্ট ও উন্নয়ন গবেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাঙালি সংস্কৃতি ও সত্ত্বার অনবদ্য ধারক ও অনুপ্রেরণার বাতিঘর। বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বায়নে রুপ দিতে তিনিই যুগ-যুগান্তরের শ্রেষ্ঠ রুপকার।
উল্লেখ্য, বর্তমান এই সময়ে পৃথিবী আজও ধুঁকছে মহামারি করোনায় আর ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে। এই সময়ে কবিগুরুর গান, কবিতা, সাহিত্য মানুষের মনে সাহস জোগাবে, মনকে শান্ত করবে। বাঙালির জীবনের যত ভাবনা, বৈচিত্র্য আছে, তার পুরোটাই লেখনী, সুর আর কাব্যে তুলে ধরেছেন কবিগুরু। তার সাহিত্যকর্ম, সঙ্গীত, জীবনদর্শন, মানবতা, ভাবনা-সবকিছুই সত্যিকারের বাঙালি হতে অনুপ্রেরণা দেয়। আর তাইতো প্রবাস জীবনে বাঙ্গালীদের মাঝে এই আয়োজন মনের খোরাক ও নির্মল আনন্দ দিতে শতভাগ সফল হবে- এমনটাই মনে করছেন সংগঠকরা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল