টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসে শুক্রবার যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয় কালো ব্যাজ ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে।
পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্যগন সহ ২৫ মার্চ কালরাতে ও নয় মাসের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নাম জানা-অজানা ৩০ লাখ শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া (মোনাজাত) করা হয়। এছাড়া দিবসটি স্মরণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ প্রথমেই ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ-এর ভয়ঙ্কর কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদারদের ঘৃণ্য ও কাপুরুষোচিত আক্রমণে যে সকল বীর বাঙালি শহীদ হয়েছেন তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, অপারেশন সার্চলাইট নামে পরিচিত এ গণহত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ঢাকাসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলিতে বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, ছাত্র ও স্বনামধন্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্য এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। জাতীয় চার নেতা, সকল শহিদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে যাদের চরম ত্যাগের বিনিমেয় নয় মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র লড়াই করে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ৩০ লাখ শহিদের রক্তে গড়া স্বাধীন বাংলাদেশ আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের মহাসড়কে। জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীগন গণহত্যা দিবসের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত করে এবং এখন সারা বিশ্বে আমাদের মিশন ও প্রবাসীরা এই দিবসটি পালন করছে। বক্তারা বিশ্বের সচেতন নাগরিকদের বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে এবং গণহত্যাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করার আহ্বান জানান।
এ দিবসটি পালন করে আমরা শুধু গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদেরই স্মরণ করি না, বিশ্বের কোথাও যাতে এ ধরনের গণহত্যার সংঘটিত না হয় আমরা সে সংকল্প নেই। অনুষ্ঠানের শেষে গণহত্যা দিবসের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর