নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ মর্যাদায় ও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। ২৬ মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় কন্স্যুলেট ভবনে লাল-সবুজের এ সংবর্ধনা-সমাবেশ এক পর্যায়ে বহুজাতিক সমাবেশে পরিণত হয়।
বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন বন্ধু এবং নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টে বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে পরিচিতরাও এসেছিলেন, অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। এছাড়া নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশীদের কর্মনিষ্ঠার কথাও অকপটে স্বীকার করেন তারা। বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বানে একাত্তরে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ এবং দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় বর্তমানে শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্ননের রোল মডেলে পরিণত হবার প্রসঙ্গও উঠে আসে এ সময়।
কনস্যুলেটের মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্টের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি। প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে সকলকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান।
কনসাল জেনারেল তার স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এ বছরটিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি হওয়ায় তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি আগামী দিনগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো গভীর ও সুদৃঢ় করার বিষয়ে তার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনর’ পদকপ্রাপ্ত ড. ডেভিড নেলিন, ডেভিড উইসব্রোড, স্টেট সিনেটর জন ল্যু, স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটেলিনা ক্রুজ, অ্যাসেম্বলিওম্যন জেনিফার রাজকুমারসহ বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেল, কূটনীতিক, স্বাগতিক দেশের কর্মকর্তাগণসহ দুইশতাধিক অতিথি ছিলেন। প্রবাসে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে মহিমান্বিত ও আনন্দঘন করেছে।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এ অনুষ্ঠান দু’পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্ব শুরু হয় সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। কনসাল জেনারেলের সভাপতিত্বে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের আলোকে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সকল সদস্যসহ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়ার মাধ্যমে প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়। সান্ধ্যকালিন সংবর্ধনা-সমাবেশটি ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবার দ্বারা অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল