কানাডার টরন্টোয় নতুন নাট্যসংগঠন ‘প্রাচ্য প্রতিচ্য নাট্য’-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ঘরোয়া ক্লাসিক মিলনায়তনে এ দলের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ। উদ্বোধনী আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় মঞ্চ ও টিভি অভিনেত্রী আফরোজা বানু।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই নাট্যকার ও নির্দেশক মাহমুদুল ইসলাম সেলিম অতিথিদের স্বাগত জানান। পুরো আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিকার হিমাদ্রী রায়। এ সময় ‘প্রাচ্য প্রতিচ্য নাট্য’ দলের দশ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা এই উদ্যোগকে প্রবাসে বাংলা নাটক ও সংস্কৃতিচর্চার একটি নতুন দিগন্ত বলে উল্লেখ করেন। আফরোজা বানুর আলোকিত উপস্থিতিকে প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে টরন্টোয় একটি সর্বদলীয় নাট্যোৎসব আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান আয়োজকরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘নাটক মানুষকে ভাবতে শেখায়, সচেতন করে তোলে। আমাদের সংস্কৃতিচর্চা যেন মনন ও চেতনার জায়গায় আরও বলিষ্ঠ হয়—এই কামনা করি।’
অনুষ্ঠানে নতুন সদস্যরা নিজেদের পরিচয় তুলে ধরেন এবং নাট্যসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন সাঈয়েদা ফাতিমা, শিউলি চৌধুরী, শাপলা শালুক ও মানবী মৃধা।
এরপর মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে ‘প্রাচ্য প্রতিচ্য নাট্য’ দলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
নাট্যকার মাহমুদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘দুই গুণীজনের উপস্থিতিতে দলের আত্মপ্রকাশ আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। এখন আমাদের কাজের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে।’
হিমাদ্রী রায় বলেন, ‘মন থেকে কিছু চাইলে প্রকৃতি তা পূরণে সহায়তা করে। নইলে শ্রদ্ধেয় মামুনুর রশীদ ঠিক এই সময়ে কানাডায় এসে আমাদের সংগঠনের উদ্বোধন করতেন না।’
কবি দেলওয়ার এলাহী বলেন, ‘আমাদের যেতে হবে আরও অনেক দূর। সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে গতিশীল করতেই শিবু চৌধুরীসহ অনেকে এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন।’
মানবী মৃধা অতিথিদের অভ্যর্থনা জানিয়ে সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সাঈয়েদা ফাতিমা বলেন, ‘এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে ও গুণীজনদের পাশে থাকতে পেরে আমি গর্বিত।’
শিউলি চৌধুরী নাটকের দলগত চর্চাকে আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। উত্তম সরকার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
আয়োজনের ব্যতিক্রমী দিক ছিল অতিথিদের বক্তব্য—যা দর্শক-শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন। অংশগ্রহণকারীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, প্রবাসেও বাংলা নাটক ও সংস্কৃতি আরও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং ‘প্রাচ্য প্রতিচ্য নাট্য’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ