বিভিন্ন ঋতুতে আমাদের জীবনে এক বিরক্তিকর অতিথি হয়ে আসে মশা। তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং পানির প্রাচুর্য তাদের বংশবৃদ্ধির আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। মশার কামড় শুধু বিরক্তিকর নয়, এটি মারাত্মক রোগের বাহক হিসেবেও কাজ করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মশা আমাদের নিঃশ্বাসে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইড, ঘামে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং ত্বকের নির্গত বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ ও গন্ধের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তবে এই আকর্ষণের ধরন বেশ জটিল এবং বিভিন্ন কারণের মিশ্রণে কাজ করে।
মশা তাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো- শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, যেমন মশারি। তবে বড় পরিসরে এটি ব্যবহার করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে মশা তাড়ানোর রাসায়নিক প্রতিরোধ কাজ করে।
১৯৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্রথম DEET (N,N-diethyl-meta-toluamide) আবিষ্কার করে। এটি মশা তাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর রাসায়নিক হিসেবে স্বীকৃত। DEET মশার ঘ্রাণগ্রাহক কোষকে প্রভাবিত করে। এটি মশার আমাদের প্রতি আকর্ষণ কমায় এবং ত্বকে অবতরণ করলে তাদের কামড়ানোর প্রবণতা দমন করে।
DEET-এর বিকল্প হিসেবে পিকারিডিন (picaridin) বর্তমানে জনপ্রিয়। এটি কার্যকারিতার দিক থেকে DEET-এর সমতুল্য এবং অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি কার্যকর। পিকারিডিনের একটি সুবিধা হলো এর গন্ধ কম তীব্র। এছাড়া, লেমন ইউক্যালিপটাস তেল থেকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তৈরি PMD (para-menthane-3,8-diol) একটি কার্যকর প্রতিরোধক হিসেবে পরিচিত।
সিট্রোনেলা মোমবাতি বা লোশন মশা তাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এটি DEET বা পিকারিডিনের মতো কার্যকর নয়। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রতিরোধক বা শব্দভিত্তিক ডিভাইসও রয়েছে। তবে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, এগুলোর বেশিরভাগই কার্যকর নয়। বিশেষত, শব্দভিত্তিক ডিভাইসগুলোর কার্যকারিতা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল