কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শুধু লেখা লেখা, ছবি আঁকা বা গান তৈরি করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এবার এটি প্রবেশ করেছে মানুষের কোষের ভেতরে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবং সিলিকন ভ্যালির বায়োটেক কোম্পানি রেট্রো বায়োসায়েন্সেস যৌথভাবে তৈরি করেছে বিশেষ এক এআই মডেল ‘জিপিটি-৪বি মাইক্রো’।
এই মডেলকে শুধু প্রোটিনের গঠন, জীববিজ্ঞানের গবেষণা এবং থ্রিডি (3D) আণবিক কাঠামো নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো এমন প্রোটিন তৈরি করা, যা পুনর্জন্ম চিকিৎসায় ( যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ বা কোষ পুনর্গঠনের চেষ্টা করা হয়) ব্যবহার করা যাবে।
গবেষকরা সাহসী এক পরীক্ষায় এই এআইকে ব্যবহার করেন। তারা ‘ইয়ামানাকা ফ্যাক্টর’ নামে পরিচিত প্রোটিনগুলোকে নতুনভাবে নকশা করেন। এই প্রোটিনগুলোর জন্য ২০১২ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এগুলো প্রাপ্তবয়স্ক কোষকে আবার স্টেম সেলে (stem cell—যে কোষ থেকে নতুন কোষ তৈরি হয়) রূপান্তর করতে পারে।
গবেষণার ফলাফল ছিল অবিশ্বাস্য। নতুন নকশা করা প্রোটিনগুলো পুরোনো প্রোটিনের তুলনায় ৫০ গুণ বেশি কার্যকরভাবে কোষকে পুনরায় তরুণ অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোষগুলো দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএও মেরামত করতে পেরেছে। সহজভাবে বললে, এআই-নির্মিত প্রোটিন বার্ধক্যপীড়িত কোষকে তরুণ কোষের মতো আচরণ করাতে সক্ষম হয়েছে।
ওপেনএআই জানিয়েছে, এই সাফল্য ভবিষ্যতে অন্ধত্ব, ডায়াবেটিস, বন্ধ্যাত্ব ও অঙ্গ সংকটের মতো জটিল সমস্যার চিকিৎসায় নতুন পথ খুলে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি দীর্ঘায়ু গবেষণা ও পুনর্জন্ম চিকিৎসার জন্য এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে এআই আর শুধু বিশ্লেষণ নয়, বরং সরাসরি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের অংশীদার হয়ে উঠেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল