শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

স্পিনে আলোকিত মিরাজ-সঞ্জিত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

স্পিনে আলোকিত মিরাজ-সঞ্জিত

ভারতকে বলা হয় স্পিনের চারণভ‚মি। ভারত জন্ম দিয়েছে বিশেষ সিং বেদী, এরাপল্লী প্রসন্ন, ভি চন্দ্রশেখর, অনিল কুম্বলে, হরভজন সিংদের মতো তারকা স্পিনার। সেই ভারত এখন ভুগছে স্পিন সংকটে। ভারতের মতো না হলেও বাঁ হাতি স্পিনারদের উর্বরভ‚মি বলা হয় বাংলাদেশকে। এই মুহূর্তে ক্রিকেট বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশের একাদশেই দেখা যায় তিন বাঁ হাতি স্পিনার! বাঁ হাতিদের আধিক্যে নেই কোনো অফ স্পিনারের। যাও বা আছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নাসির হোসেন, কিন্তু কেউই স্পেশালিস্ট নন। তবে ভবিষ্যতের অফ স্পিনারের সন্ধান দিয়েছে এবারের জাতীয় ক্রিকেট লিগ। জাতীয় ক্রিকেটের তৃতীয় রাউন্ডে খুলনা-রংপুরের ম্যাচের আড়ালে লড়াই হয়েছে দুই অফ স্পিনার খুলনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও রংপুরের পক্ষে সঞ্জিত সাহার। দুজনেই আবার অনূর্ধ্ব-১৯ যুব দলর ক্রিকেটার। দুজনের আলোকিত পারফরম্যান্সে আড়ালে পড়ে গেছেন অন্য বোলাররা। শুধু তৃতীয় রাউন্ডেই নয়, আগের রাউন্ডগুলোতেও উজ্জ্বল ছিলেন দুই তরুণ। 

মেহেদি হাসান মিরাজ  বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পক্ষে খেলতে দেশের বাইরে গেছেন। যুব দলের এই অফ স্পিনারকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তারকা। নাইমুর রহমান দুর্জয়, আজহার হোসেন সান্টুদের উত্তরসূরি আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাওয়ার ক্ষমতা রাখেন বলে বিশ্বাস কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের, ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার ক্ষমতা রয়েছে মিরাজের। সে খুবই প্রতিভাবান অফ স্পিনার। ওয়ানডে এবং লঙ্গার ভার্সান ক্রিকেটে খেলার সামর্থ্য তার রয়েছে।’ জাতীয় ক্রিকেটের প্রথম তিন রাউন্ডে মিরাজ বোলিং করেন ১১৩.৩ ওভার। রান দেন ২৫১। উইকেট ১৮ এবং সেরা বোলিং ৫০/৬। রংপুরের বিপক্ষে ম্যাচে ১০ উইকেট নেন। তার বোলিংয়ের মূল অস্ত্র লাইন-লেন্থ বলেন কোচ বাবুল, ‘মিরাজ ব্যাটসম্যানদের খুব ভালোভাবে রিড করতে পারেন। বোলিংয়ে দুসরা ছাড়াও আর্মটা ভালো করেন। তবে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে একটানা একই জায়গায় বোলিং করে যেতে পারা।’ বোলিংয়ের পাশাপাশি লেট মিডল অর্ডারে ভালো ব্যাটিংও করেন মিরাজ।

যুব দলের আরেক অফ স্পিনার সঞ্জিত রংপুরের পক্ষে প্রথম রাউন্ড খেলেননি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাউন্ড খেলে হৈ চৈ ফেলে দেন ক্রিকেটপাড়ায়। দুই ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ১১টা। এরমধ্যে গত ম্যাচেই নেন ১০টি। সেরা বোলিং ৬৪ রানে ৭টি। অফ স্পিন করলেও মূলত সঞ্জিত একজন রিস্ট স্পিনার। অ্যাকশন মুত্তিয়া মুরলীধরনের মতো। মুরলীর মতো অ্যাকশন হলেও হাত ভাঙার কোনো অভিযোগ এখনো উঠেনি তার বিপক্ষে। ভবিষ্যতে যাতে না উঠে, সেজন্য দুসরা মারা বন্ধ করে দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সঞ্জিতকে নিয়েও প্রত্যাশা অনেক যুব দলের কোচ বাবুলের, ‘সঞ্জিত খুব অফ স্পিনার। লঙ্গার ভার্সান ক্রিকেটের জন্য সে খুবই স্পিনার। সে মূলত রিস্ট স্পিনার। মুরলীধরনের মতো অ্যাকশন বলে টার্ন বেশি। বল কিক করে। যা ব্যাটসম্যানদের খেলতে সমস্যায় ফেলে।’

জাতীয় ক্রিকেটে দুই অফ স্পিনার আলো ছড়িয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বরাবরের মতো আধিপত্য ধরে রেখেছেন বাঁ হাতি স্পিনাররা। ঢাকা বিভাগের বাঁ হাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেলের তিন ম্যাচে উইকেট সংখ্যা ২৪টি। টানা তিন ম্যাচে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। দ্বিতীয় স্থানেও বাঁ হাতি স্পিনার রাজশাহীর সাঞ্জামুল ইসলাম। তার উইকেট সংখ্যা ২০টি। উইকেট সংখ্যায় তৃতীয় মেহেদি হাসান মিরাজ। চতুর্থ স্থানে জাতীয় দলে সাবেক হয়ে যাওয়া বাঁ হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক রাজ। রাজ্জাকের উইকেট সংখ্যা ১৩। পঞ্চম স্থানে সঞ্জিত সাহা।

জাতীয় লিগে প্রথম পাঁচ বোলারের সবাই স্পিনার। তিনজন বাঁ হাতি এবং দুজন অফ স্পিনার। দুজনই ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর