শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

হকিতে আবারও উত্তেজনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকিতে আবারও উত্তেজনা

হকি লিগে মোহামেডানের আক্রমণ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সব দল নিয়ে হকি আসর মাঠে গড়ানোয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল ক্রীড়ামোদীরা। হকির জনপ্রিয়তা যে কমে যায়নি, তার প্রমাণ মিলেছে ক্লাব কাপে। বড় দলগুলোর ম্যাচে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই ক্লাব কাপের পর্দা নামে। অভিমান বা যেটাই বলি না কেন মোহামেডানের মতো বড় দল মাঠে ফেরাতে হকির আকর্ষণ বেড়ে যায়। মোহামেডান বা আবাহনী ছাড়া আসরের কোনো আকর্ষণ থাকে না। মোহামেডানসহ পাঁচ ক্লাব ফিরে আসায় হকির আকাশে কালো মেঘ দূর হয়ে যায়। ক্লাব কাপের পর নির্ধারিত সময় প্রিমিয়ার লিগও মাঠে গড়ায়। সব মিলিয়ে একটা সুস্থ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। মান উন্নয়নে ভালোমানের বিদেশি কোচ খোঁজা হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। নভেম্বরে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। সত্যি বলতে কি হকিকে এগিয়ে নিতে বর্তমান কমিটি কোনো কিছুর ঘাটতি রাখছে না। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেকের উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। বৃদ্ধ বয়সে তিনি যে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তা অন্যদের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। চার দল আবাহনী, ঊষা, মোহামেডান ও মেরিনার্স সমমানের দল গড়ে। সোনালী ব্যাংক ও ওয়ান্ডারার্সও ভালোমানের দল গড়ে। লিগের আকর্ষণ বাড়াতে এবারই প্রথম পাঁচ জন করে বিদেশি খেলোয়াড়ের খেলার অনুমতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে লোকাল খেলোয়াড়দের আপত্তি ছিল, কিন্তু এটাও মানতে হবে আসর হয়ে উঠছে উপভোগ্য। কে যে চ্যাম্পিয়ন হবে বলা যাচ্ছিল না। আগে যায় হোক না কেন হকিতে সুস্থ আবহাওয়ার আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু লিগে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তাতে সুষুমভাবে আসর শেষ হতে পারবে কিনা এনিয়ে ক্রীড়ামোদীরা শঙ্কিত।

ক্লাব কাপে উত্তেজিত পরিবেশ দেখে ফেডারেশন লিগের শুরু থেকেই বিদেশি আম্পায়ার মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। লোকালের পরিবর্তে বড় ম্যাচগুলোতে বিদেশি আম্পায়ারই থাকছে। তারপরও মাঠে হট্টগোল লেগেই আছে। ভুল মানুষ মাত্রই হতে পারে। তাই বিদেশি আম্পায়াররা পুরোপুরি নির্ভুলভাবে খেলা পরিচালনা করবেন তা ভাবাটাও ঠিক হবে না। মাঝে মধ্যে ভুল হতেই পারে।

মেহামেডান-আবাহনী ম্যাচে বাড়তি উত্তেজনা থাকবেই। তাই ম্যাচ চালাতে হবে নির্ভুল বা শক্ত হাতে। লিগে এবার এক পেনাল্টি কর্নারকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি হয় তাতে বড় ধরনের হট্টগোল বেঁধে যেতে পারে। ম্যাচ যখন ২-২ ড্র চলছিল তখুনি মোহাডেমানের পক্ষে পেনাল্টি কর্নার দেন আম্পয়ার। আবাহনী এতে আপত্তি করলে রেফারি আবার পেনাল্টি কর্নার বাতিল করে দেয়। পরে আবার মোহামেডান বেঁকে বসে। মোহামেডানকে ধন্যবাদ দিতে হয় পরে তারা মাঠে ফিরে। তানা হলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারত। কেননা মোহামেডান বা আবাহনীর পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়ে তা বাতিল করলে কি পরিণতি হয় সে অতীত স্মৃতি নিশ্চয় অনেকের জানা আছে।

সেদিন মোহামেডান প্রশংসিত হলেও বুধবার ঊষার বিপক্ষে যা করেছে তা মোহামেডানের মতো দলের জন্য বড্ড বেমানান। কেন জানি ম্যাচের শুরু থেকে তারা দুই বিদেশি আম্পায়ারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। অধিকাংশ সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিতে পারছিল না। সে কারণে ম্যাচটা শেষ করা যায়নি। গতকাল সকালে বাকি ১৮ মিনিট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। আগের দিন অসমাপ্ত অবস্থায় ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র থাকে। কাল দুদল ১টি করে গোল করলে ফলাফল দাঁড়ায় ৩-৩। ঊষা-মোহামেডানের তুলনায় বুধবার প্রথম ম্যাচটা ছিল আরও উত্তপ্ত। মেরিনার্স-সোনালী ব্যাংকের খেলা বার বার বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বিদেশি আম্পায়ার এনেও শান্তি পাচ্ছে না ফেডারেশন। হকি লিগে বিদেশি আম্পায়ার নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু এবার কেন জানি বিদেশিদের মধ্যে ভুলের পরিণামটাও বেশি। হকিতে তো আবার ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। যা হচ্ছে তা কোনো মহলের ইন্ধনে হচ্ছে কিনা সেই সন্দেহও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ফেডারেশন অনেক ছাড় দিয়েছে, কিন্তু যে পরিস্থিতি আসুক না কেন তা কঠিনভাবে প্রতিহত করতে হবে। তা না হলে যে সুস্থ পরিবেশ তা ধরে রাখা যাবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর