বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বেপরোয়া কিরণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বেপরোয়া কিরণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

মাহফুজা আক্তার কিরণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ মামলায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবু হাসান প্রিন্স বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে এ আদেশ দেয়।

মামলার অভিযোগে জানা যায়, ৮ মার্চ বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়ামোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে হীন মানসিকতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, ফুটবল সংগঠকদের মানহানির উদ্দেশ্যে মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সব খেলাই তার কাছে সমান। সেখানে কেন দুই চোখে দেখবে? মেয়েরা ব্যাক টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন। গিফট তো পরের কথা, অভিনন্দন তো দিতে পারে, মিডিয়ায় কি কোনো অভিনন্দন জানিয়েছে? বাফুফের টাকা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে দেওয়াব কেন। বিসিবির অনেক স্বার্থ আছে। বিসিবি সরকারের অনেক ফ্যাসালিটিজ নেয়। চুন থেকে পান খসলেই প্লট পেয়ে যায়, গাড়ি পেয়ে যায়। অথচ সরকারের কাছ থেকে বাফুফে কোনো ফ্যাসালিটিজ নেয় না।’

কিরণের এমন বক্তব্য বেসরকারি টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইনে প্রকাশিত হয়। তার এমন বক্তব্যে বাদীর ৫০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে মর্মে আদালতে মামলাটি করা হয়। ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করায় কোনো সংগঠকের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

কথা হচ্ছে, কিরণের এই শক্তির উৎস কোথায়? যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করার সাহস পান? কখনো খেলার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও ২০০৯ সালে ক্রীড়াঙ্গনে কিরণের আবির্ভাব হঠাৎ করেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছের লোক দাবি করে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন কিরণ। কোনো যোগ্যতা না থাকার পরও ২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে তিনি বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হন।

এ সংস্থার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ লিখিতভাবে তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেও লাভ হয়নি। দিনের পর দিন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন কিরণ। কথায় কথায় তিনি সাংবাদিকদের তিরস্কৃত করেন। বাফুফে নির্বাহী কমিটিতে নির্বাচিত হয়ে কিরণ যে আচরণ করেন তাতে মনে হয় তিনিই দেশের ফুটবলের অভিভাবক। তার আচরণে অন্য কর্মকর্তারা বার বার সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের কাছে নালিশ করলেও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং সালাউদ্দিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা আরও বৃদ্ধি পায়।

প্রধানমন্ত্রীর কাছের লোক দাবি করলেও পারিবারিকভাবে জামায়াত নেতা মীর কাসিমের সঙ্গে কিরণের আত্মীয়তা রয়েছে বলে জানা যায়। কিরণের এমন আচরণে বাফুফের কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ। সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহী কিরণের শাস্তি চান। তিনি বলেন, একজনের আচরণে ফুটবলের ভাবমূর্তি নষ্ট হোক তা হতে দেওয়া যায় না।

সর্বশেষ খবর