একজন উচ্ছৃঙ্খল তরুণী হিসেবে তিনি সিগারেট ফুঁকতেন সারা দিন। মদ খেয়ে মাতাল হতেন। পার্টি নিয়ে পড়ে থাকতেন বন্ধুদের সঙ্গে। অল্প বয়সে এ সবকিছুতে অভ্যস্ত হলে সহজে ছাড়া যায় না। কিন্তু শ্যানন কোর্টিনি সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। অর্থহীন জীবনের একেবারে তলা থেকে এক লাফে ওঠে এসেছেন। নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় মেলে ধরেছেন। অ্যামেচার বক্সিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এবার স্বপ্ন বুনছেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।
হার্টফোর্ডশায়ারের অ্যাবোট ল্যাংলিতে জন্ম শ্যানন কোর্টিনির। জীবন কেটে যাচ্ছিল হাসি-আনন্দে। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন ভাবলেন, জীবন কী এভাবেই কেটে যাবে! কিছু একটা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন। এক ধাক্কায় যেন ঘুম থেকে জেগে ওঠলেন শ্যানন। সিগারেট, মদ, পার্টি সব ছেড়ে মন দিলেন বক্সিংয়ে। পাঁচ বছর আগে যোগ দেন লন্ডনের ফিঙ্কলি অ্যামেচার বক্সিং ক্লাবে। ২০১৫ সালে হ্যারিঙ্গি বক্স কাপে সোনার পদক জয় করেন শ্যানন। এরপর গত বছর পেশাদার বক্সিংয়ে নাম লিখিয়েই টানা পাঁচটা লড়াই জয় করেন তিনি। হারিয়েছেন রুমানিয়ার ক্রিস্টিনা, বুলগেরিয়ার রোজ ম্যারি, লাটভিয়ার ভ্যালেরিয়া সেপেতভস্কা, সার্বিয়ার জেসমিনা ন্যাড এবং স্পেনের বুশরা আল কুয়াইসিকে। এর মধ্যে দুটি লড়াই জিতেছেন নকআউটে।
‘এক সময় খুব ধূমপান আর মদ পান করতাম। পার্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। তবে আমি বক্সিং খুঁজে পেয়েছি। আর বক্সিংও আমাকে খুঁজে পেয়েছে একেবারে সঠিক সময়ে।’
শ্যানন বর্তমানে বিশ্বসেরা বক্সার সঙ্গে অ্যাডাম বুথের জিমনেশিয়ামে ট্রেনিং করছেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি এক সময় খুব ধূমপান আর মদ পান করতাম। পার্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। তবে আমি বক্সিং খুঁজে পেয়েছি। আর বক্সিংও আমাকে খুঁজে পেয়েছে একেবারে সঠিক সময়ে।’ দিনে অন্তত ৪০টা সিগারেট ফুঁকতেন শ্যানন। তারপর একদিন হঠাৎ করেই ফিঙ্কলিতে যান। তার হাতে ছিল সিগারেট। সেখান থেকে বের হয়েই সব বদলে যায়। সিগারেট ফেলে দেন ডাস্টবিনে। বাড়িতে এসে ডিনার সারেন। পরেরদিন খুব ভোরে ওঠে দৌড়াতে চলে যান। এভাবে চলতেই থাকে। ধীরে ধীরে বক্সিংয়ের জন্য নিজেকে উপযোগী করে তোলেন শ্যানন। মেয়েদের বক্সিংয়ে এক নতুন তারকা হিসেবে আবিভর্‚ত হয়েছেন তিনি।