বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সামনে ভয়ংকর ৯৮ ওভার

সাকিবের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সামনে ভয়ংকর ৯৮ ওভার

ছবি : রোহেত রাজীব

চতুর্থ দিনে দ্রুত ৩০০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। তারপর ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দিন শেষে মহাবিপদে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দলকে বাঁচাতে বাংলাদেশকে বাইশগজে লড়াই করতে হবে আরও ৯৮ ওভার। কারণ, টেস্টের নিয়মানুযায়ী এক দিনে সর্বোচ্চ ৯৮ ওভারই খেলা যায়।

তবে স্বাভাবিক নিয়মে এক দিনে ৯০ ওভার খেলার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে সময় নষ্ট হওয়ায় শেষ দিনে সর্বোচ্চ ৯৮ ওভার খেলা হতে পারে। আর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই।

গতকাল ছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ‘আত্মহত্যা’র দিন। পাকিস্তানের স্পিনাররা যতটা না ভালো বোলিং করেছেন তারচেয়ে বেশি তারা সহায়তা পেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে। বাজে শট খেলে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা একের পর এক উইকেট উপহার দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একমাত্র নাজমুল হোসেন শান্ত ৩০ রান করেছেন। বাকি আর কোনো ব্যাটসম্যানই আউট হওয়ার আগে নামের পাশে থাকা স্কোরকে ডাবল ফিগারে নিয়ে যেতে পারেননি।

তবে এখন বাংলাদেশের ম্যাচ বাঁচানোর আশা শেষ হয়ে যায়নি। কারণ, উইকেটে এক পাশ আগলে রেখেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি ২৩ রানে রয়েছেন অপরাজিত। আরেক পাশে থাকা অপরাজিত ব্যাটসম্যান তাইজুল ১০ বল মোকাবিলা করে কোনো রান করতে পারেননি। ফলোঅন এড়াতে হলে বাংলাদেশের দরকার আরও ২৫ রান।

বাংলাদেশ ফলোঅন এড়াতে পারলে পাকিস্তানকে নামতে হবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে। তখন কিছুটা সময় নষ্ট হবে। ম্যাচ বাঁচানোর কাজটা কিছুটা সহজ হয়ে যাবে। পাকিস্তানের বোলাররা প্রাণপণে চাচ্ছেন বাংলাদেশকে ফলোঅনে ফেলতে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকেই আবার ব্যাটিংয়ে নামতে হবে।

গতকাল ‘মুমিনুল ছাড়া’ স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের সব কটি উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের স্পিনার সাজিদ খান। তিনি ৩৫ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক রান আউট না হলে হয়তো ইনিংসে ১০ উইকেট লাভ করার একটি সম্ভাবনাও উঁকি দিত।

গতকাল বাংলাদেশের উইকেট পতন শুরু হয় মাহমুদুল হাসান জয়কে দিয়ে। যুব বিশ্বকাপী জয়ী দলের এই ব্যাটসম্যান সাদা পোশাকে নিজের অভিষেক ইনিংসকে রাঙাতে পারলেন না। রানের খাতা খেলার আগেই বিদায় নিলেন। এরপর আগে ওপেনার সাদমানও ৩ রানের বেশি করতে পারলেন। ব্যাট হাতে আবারও ব্যর্থ অধিনায়ক মুমিনুল হক। চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসে তার স্কোর ছিল ৬ ও ০। গতকাল তো ১ রানের বেশি করতেই পারলেন না। মিডল অর্ডারে ভরসা মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসও নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দিলেন। একই পথে হাঁটলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে দিনের বাকি সময়টা তাইজুলকে নিয়ে পার করিয়ে দিলেন সাকিব।

এখন প্রথম ইনিংসে সাকিবই বাংলাদেশের একমাত্র ভরসা। লেজের ব্যাটসম্যানদের আজ সকালে কতটা সময় তিনি বাইশগজে অতিবাহিত করতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়। তবে এখন একটা ইনিংস বাকি আছে বাংলাদেশের। প্রথম ইনিংস থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে কতটা ভালো করতে পারবেন ব্যাটসম্যানরা সেটাই দেখার বিষয়। তবে প্রথম ইনিংসেই সাকিব যদি বীরত্ব দেখাতে পারেন তাহলে ম্যাচ বাঁচানো খুব একটা কঠিন হওয়ার কথা নয়। গতকাল শেষ বিকালে অবশ্য নিজের কাজটি দারুণভাবে করেছেনও তিনি। ওভারের পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ বলে সিঙ্গেলস নিয়ে স্ট্রাইক রোটেড করছিলেন। এখন এটাই একমাত্র উপায়।

তবে গতকালের মতো আজও যদি ব্যাটসম্যানরা নিজেদের উইকেট উপহার দিয়ে আসেন বাইশগজে তাহলে ম্যাচ বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে। আজ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে ‘ভয়ংকর ৯৮ ওভার’!প

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাকিস্তান ১ম ইনিংস : ৩০০/৪ (ডি.)

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬ ওভারে ৭৬/৭ (সাদমান ৩, মাহমুদুল ০, শান্ত ৩০, মুমিনুল ১, মুশফিক ৫, লিটন ৬, সাকিব ২৩*, মিরাজ ০, তাইজুল ০*; সাজিদ ৬/৩৫)।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর