শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সন্ধ্যায় ধমক, রাতে মিষ্টি!

আব্দুস সালাম সায়েম, সিরাজগঞ্জ

সরকার থেকে পাওয়া জমি নিয়ে আদালতের সমন বুঝে নিতে চ্যাম্পিয়ন দলের নারী ফুটবলার আঁখি খাতুনের বাবাকে শাসিয়ে গেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা পুলিশ। আদালতের কাগজে সই করতে রাজি না হওয়ায় আঁখির বাবাকে থানায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন শাহজাদপুর থানার এসআই মামুন- এমন অভিযোগ আঁখি ও তার বাবার। ডিফেন্ডার আঁখি বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় শাহজাদপুর থানা থেকে এসআই মামুন আমাদের বাড়িতে এসে আমার বাবাকে আদালতের একটি কাগজে সই করতে বলেন। আমার বাবা সেই কাগজে সই করতে রাজি হননি। তাই আমার বাবাকে এসআই মামুন থানায় নিয়ে যাবেন বলে হুমকি দেন এবং গালমন্দ করেন। পরে বাবা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানান। এসআই নাকি বলেছেন, আমি বাড়ি যাওয়ার পর থানায় যেতে হবে আমাকে। আসলে গতকাল এমন এক আনন্দঘন মুহূর্তে এমন সংবাদে আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন,  বুধবার সন্ধ্যায় থানা থেকে এসআই মামুন সাহেব এসে আমাকে একটা কাগজ দিয়ে বলেন, আঁখি তো বাড়িতে নেই। তার পরিবর্তে আপনি এই কাগজে সই দেন। আমি বলি কেন সই দেব, আমি তো বাদী বা আসামি কোনোটাই না। আমি পুলিশকে বলেছি, আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আমাকে কটূক্তি করে আরেক পুলিশ সদস্য ধরে নিয়ে যাবে বলেছেন। আসলে এই জায়গা তো আমাদের সরকার দিয়েছে। কোনো মামলা বা অভিযোগ হলে সরকারের নামে হবে। আমাদের নামে কেন আদালত সমন পাঠাবে।

শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, আসলে ঘটনাটা একটু ভুল বোঝাবুঝি। পরে রাতেই আমি এসআইকে সঙ্গে করে মিষ্টি নিয়ে আঁখিদের বাড়িতে যাই। এবং এই ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাটা মিউচুয়াল করে দিই।

আঁখির নামে শাহজাদপুরের দাবারিয়ায় একটি জায়গা আছে, সেই জায়গা নিয়ে মোকারম হোসেন নামে এক ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত শান্তির লক্ষ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে একটি নোটিস প্রেরণ করেন। আমি বিজ্ঞ আদালতের সেই কাজটি প্রেরণ আর বুঝিয়ে নিয়েছে সে জন্য একটি স্বাক্ষর দিতে বলি। কিন্তু আঁখির বাবা সেই স্বাক্ষর দিতে রাজি না হলে আমি থানায় চলে আসি। আমি তাকে কোনো প্রকার হুমকি-ধমকি দেইনি বা থানায়ও নিয়ে আসতে চাইনি। শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, আসলে গতকালের ঘটনাটা একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে রাতেই আমি ও আমার এসআইকে সঙ্গে করে মিষ্টি নিয়ে আঁখিদের বাড়িতে যাই এবং এই ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাটা মিউচুয়াল করে দিই। আসলে আদালতের সমন এলে আমাদের সেই কাজ করতে হয়। বিষয়টি তেমন কিছু না। শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, তাদের ঘিরে যখন গোটা দেশ মেতেছে উৎসবে তখন এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিতই বটে। তবে আমি রাতে শোনার সঙ্গে সঙ্গে ওসি সাহেবকে সঙ্গে নিয়ে আঁখিদের বাড়িতে যাই। আঁখির বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলি। আর আঁখিকে যে জায়গা দেওয়া হয়েছে সেটা সরকারের একটা নিষ্কণ্টক জায়গা। এখানে কোনো সমস্যা নেই। তবে এক ব্যক্তি যে অভিযোগ দিয়েছে তা আমরা তদন্ত করে দেখব। সেই সঙ্গে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেব। আঁখির এই জায়গা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।

সর্বশেষ খবর