দেশের ফুটবলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফের হ-য-ব-র-ল অবস্থা। নানা বিতর্কে ফুটবল ফেডারেশন এখন বড় চাপের মুখে আছে। বিভিন্ন বার্ষিক সাধারণ সভায় অডিট রিপোর্ট অনায়াসে পাস হলেও ফিফার কাছে ঠিকই ধরা খেয়েছে। আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থার অনুদান নিয়ে অনিয়মের কথা বিভিন্ন সময় উঠলেও বাফুফের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বলে থাকেন কোনো অনিয়ম নেই। সবকিছু স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ফিফার চোখ এড়াতে পারেননি তারা। ঠিকই ধরে ফেলেছে ফান্ড ঠিক খাতে ব্যয় হচ্ছে না। লুকোচুরির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। ফিফাতো তাদের সদস্যভুক্ত সব দেশকেই অনুদান দেয়। তার আবার সঠিক হিসাব বুঝিয়ে দিতে হয়। এখানেই ধরা খেয়ে গেছে বাফুফে। আসলে বাফুফে বললে ভুল হবে। ৩/৪ জন সদস্যর এমন কর্মে নাজেহাল অবস্থা।
ইংলিশ কোচ জেমি ডে তার বকেয়া না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ করার পর বাংলাদেশকে নিয়ে ফিফার অবিশ্বাসের সন্দেহটা বেড়ে যায়। একজন কোচ বিদায় করার পরও যখন তার বড় পরিমাণে অর্থ বাকি থাকে তখন তো প্রশ্ন উঠবেই বাফুফে অর্থ সঠিক খাতে ব্যয় করে কিনা। জেমিডে যেদিন জানালেন, তাঁর বকেয়া না মেটানোর জন্য ফিফা বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নে অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে। এমন বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাফুফে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় বিদায়ী কোচ জেমির অর্থ বাকি থাকলেও ফিফা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ফিফা সত্যিই অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে কিনা তা স্পষ্ট না হলেও ফিফাকে সামলাতে বাফুফেকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মাথার ওপর যেন বাজ পড়েছে। জানা যায় ফিফার অর্থ কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার হিসাব ফিফার সদর দফতরে পাঠানো হয়। কিন্তু ফিফা বলে দিয়েছিল এতে তারা সন্তুষ্ট নয়। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ চারজনকে ফিফার সদর দফতরে উপস্থিত হয়ে হিসাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে আবার একজনের লাপাত্তা। হঠাৎ বাংলাদেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেছেন। তবে সোহাগ আরও কজনকে সঙ্গী করে সুইজারল্যান্ড ফিফার সদর দফতরে উপস্থিত হন এবং ফিরেও আসেন।ফিফায় গিয়ে সমস্যার সমাধান না জটিলতা বেড়েছে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলছে না। সোহাগ বলেন, ফুটবলের লোক তো আর আইসিসিতে যাবে না। ফিফাতে যাবে সুতরাং এখানে রহস্যের কিছু নেই। আর কাজী সালাউদ্দিন যা বলেছেন তাতো আরও হাস্যকর। সাধারণ সম্পাদক কী কারণে ফিফার সদর দফতরে গেছেন তা নাকি কিছুই জানেন না। অবাকলাগে বাফুফের এমন কান্ডের পরও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নীরব? কেননা এটা পরিষ্কার ফিফা ক্ষুব্ধ বাফুফের ওপর। এ সমস্যার সমাধান না হলে ফিফা ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নেবে। ২০০২ সালে যা ঘটেছিল এবার যা শোনা যাচ্ছে তা তো আরও ভয়ংকর। এখানে দেশের সুনামও জড়িয়ে আছে।