আয়ারল্যান্ড পরিচিত প্রতিপক্ষ। ভেন্যু চেমসফোর্ডও পরিচিত। দুই যুগ আগে ১৯৯৯ সালে এ চেমসফোর্ডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের। ১৯৯৯-২০২৩; ব্যবধান ২৪ বছর। দুই যুগ পর ফের চেমসফোর্ডে সাদা বল ও রঙিন পোশাকে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। এবার প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। চেমসফোর্ড পরিচিত ভেন্যু, কিন্তু এবারের সিরিজে কন্ডিশনের কারণে চেমসফোর্ড একটু বেশিই অপরিচিত। তাই আগামীকাল শুরু তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ড প্রতিপক্ষ হিসেবে যতটা ভয়ংকর, তার চেয়েও ভয়ংকর চেমসফোর্ডের কন্ডিশন। এখন সেখানে সামার। তাপমাত্রা ১৫-১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কখনো দিনভর বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। ইংল্যান্ডে সামার হলেও বাংলাদেশে এ তাপমাত্রা শীতকালে দেখা মেলে। এমন পরিবেশে ক্রিকেট ম্যাচ খেলা একটু বেশিই কঠিন। তারপরও এ পরিবেশেই বিশ্বকাপ সুপার লিগের সবশেষ তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে হবে তামিম বাহিনীকে। প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। মার্চে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০- তিন সিরিজে আইরিশদের হারিয়েছে টাইগাররা। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে ৯, ১২ ও ১৪ মে চেমসফোর্ডের ক্লাউডি কাউন্টি গ্রাউন্ডে ম্যাচ তিনটি খেলবেন তামিমরা। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে জোর লড়াই করতে হবে কন্ডিশনের বিপক্ষে। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাই কঠিন বলেছেন দলের স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ, ‘এখানে এখন অনেক ঠান্ডা। এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হচ্ছে আমাদের।’ আইরিশদের বিপক্ষে ফেবারিট হলেও তামিম বাহিনী মাঠে নামছে কোনো ধরনের প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই। ৫ মে আয়ারল্যান্ড ওলভসের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ওয়ানডে খেলার কথা ছিল টাইগারদের। কিন্তু বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয় ম্যাচটি। আশার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ সম্প্রচার করবে ‘প্রিমিয়ার স্পোর্টস’। বাংলাদেশের কোনো চ্যানেল দেখাবে এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি।
সবশেষ দল হিসেবে টেস্ট খেলুড়ে দেশের মর্যাদা পায় আয়ারল্যান্ড। টেস্ট খেলুড়ে দেশ হওয়ার আগে থেকেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলছে ইউরোপিয়ান দেশটি। দুই দেশ এখন পর্যন্ত ওয়ানডে খেলেছে ১৩টি। দুটি খেলা হয়নি। ৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। যদিও দুই দলের প্রথম লড়াইয়ে জিতেছিল আয়ারল্যান্ড, ২০০৭ সালে ব্রিজটাউনে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সুপার এইটে। গত মার্চে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে। প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল ১৮৪ রানে। যা ওয়ানডে ক্রিকেটে রানের ব্যবধানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিং করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বৃষ্টিতে আয়ারল্যান্ড মাঠেই নামতে পারেনি। পরিত্যক্ত হয়। তারপরও ম্যাচটিতে টাইগাররা দলগত ও ব্যক্তিগত দুটি রেকর্ড গড়ে। প্রথমে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান করে। যা যে কোনো দলের বিপক্ষে দলগত সর্বোচ্চ। ম্যাচে মুশফিকুর রহিম ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেন; যা বাংলাদেশের ব্যাটারদের পক্ষে দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। তৃতীয় ওয়ানডে টাইগাররা জিতে নেয় ১০ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো কোনো দলের বিপক্ষে ১০ উইকেট জয়ের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
রেকর্ডময় সিরিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ১ মে ইংল্যান্ড যায় টাইগাররা। সেখানে অনুশীলন করেছে মোট তিন দিন। কোনো ধরনের বৃষ্টিবাধায় পড়েনি তামিমদের অনুশীলন। দল কয়েক ধাপে ইংল্যান্ড যায়। প্রথম ধাপে কয়েকজন ক্রিকেটারসহ কোচিং স্টাফ। দ্বিতীয় ধাপে তামিমসহ অন্য ক্রিকেটাররা ঢাকা ছাড়েন। দেশের বাইরে থাকায় সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও মুস্তাফিজুর আলাদা আলাদা সময়ে চেমসফোর্ডে দলের সঙ্গে যোগ দেন। পারিবারিক কারণে সময়ের আগেই আইপিএল থেকে ঢাকায় ফেরেন লিটন। এরপর ৩ মে দলের সঙ্গে যোগ দেন টাইগার টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক। মুস্তাফিজ যোগ দেন ৪ মে রাতে এবং সাকিব যোগ দেন ৫ মে। এখন পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলবে তামিম বাহিনী।