শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরিসংখ্যানে এগিয়ে মোহামেডান

মনোয়ার হক

পরিসংখ্যানে এগিয়ে মোহামেডান

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালেই প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে ঢাকা আবাহনীর আবির্ভাব ঘটে। পাকিস্তান আমলে মোহামেডান, ওয়ান্ডারার্স বা বিজেএমসির ম্যাচ ঘিরে উন্মাদনা সৃষ্টি হতো। শুরুতে আবাহনীর জনপ্রিয়তা  চোখে না পড়লেও ১৯৭৫ সাল থেকে আবাহনী-মোহামেডানের লড়াই উত্তেজনায় রূপ নেয়। লিগ, ফেডারেশন কাপ দুই দলের যে কোনো ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে কী উত্তেজনা তৈরি হতো তা বলে শেষ করা যাবে না। গ্যালারি তো ভরে যেতই। কাঁটাতার ডিঙিয়ে দর্শকরা মাঠের কিনারায় বসে ম্যাচ দেখতেন। আশপাশে উঁচুতলার ভবনেও ভিড় দেখা যেত। এমনকি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্লাডলাইটের টাওয়ারে উঠেও খেলা দেখত। দুই দলের খেলাকে ঘিরে দুঃখজনক ঘটনাও কম ঘটেনি। দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষে প্রাণও হারিয়েছেন বেশ কজন দর্শক।

এই হচ্ছে সেই আবাহনী-মোহামেডান। যে দলে খেলা মানে তারকা বনে যাওয়া। বাংলাদেশের সব বিখ্যাত ফুটবলার খেলেছেন দুই দলে। শিরোপা মোহামেডান-আবাহনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। এত উত্তেজনা ও উচ্ছ্বাস কোথায় যেন হারিয়ে গেল। মোহামেডান-আবাহনীর গ্যালারি ভরা ম্যাচ শেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৯ সালে নতুন টুর্নামেন্ট কোটি টাকার সুপার কাপে। এরপর সব স্মৃতিতে পরিণত হয়। ঘরোয়া ফুটবলে আবাহনী তাদের দাপট ধরে রাখলেও মোহামেডান বড্ড ম্লান। ২০০২ সালের পর লিগই জিততে পারেনি। ২০১৩ সালে শেষবারের মতো ফাইনাল খেলে স্বাধীনতা কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। আবাহনীর বিপক্ষে শেষ ফাইনাল খেলে ২০১১ সালে। ম্যাচটি আবাহনী জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। আর মোহামেডান শেষবার আবাহনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ২০০৯ ফেডারেশন কাপে।

আশার কথা, ১৪ বছর পর আবাহনী ও মোহামেডান ফেডারেশন কাপে ফাইনালে লড়বে। কুমিল্লা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচটি হবে ৩০ মে। ভারতের মাটিতে চার্মস কাপে দুই দল শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হলেও এই প্রথম বাফুফে অন্তর্ভুক্ত কোনো টুর্নামেন্টের দুই দল ফাইনাল খেলবে অন্য জেলায়।

অনেক দিন পর দুই দলের ফাইনাল হচ্ছে বলে সাবেক দুই তারকা ফুটবলার আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু ও কায়সার হামিদ বড্ড খুশি। দুজনই অভিন্ন সুরে বলেন, ‘আশা করি ফাইনালে কুমিল্লার গ্যালারি ভরে যাবে। শিরোপা ম্যাচটি হবে উপভোগ্য।’

মোহামেডান-আবাহনী ফাইনাল হলেই পরিসংখ্যানের বিষয়টি গুরুত্ব হয়ে ওঠে। ফুটবল লড়াই বা ফাইনালে কে এগিয়ে তর্কে মেতে ওঠে দুই দলের সমর্থকরা। মোহামেডানের ব্যর্থতার মাঝে আবাহনী সাফল্য ধরে রাখলেও দুই দলের ফাইনালের পরিসংখ্যানে মোহামেডান বেশ এগিয়ে। ১৯৭৬ সালে প্রথম বিভাগ লিগে দুই দল প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি হয়। এরপর বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তারা আরও ২০ বার ফাইনালে লড়ে। এর মধ্যে মোহামেডান ১৩টি ও আবাহনী জয় পেয়েছে ৭টি। ১৯৮২ সালে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে দুই দলের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হওয়ায় আবাহনী-মোহামেডানকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। আর ১৯৮৪ সালে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে তাদের ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

সর্বশেষ খবর