শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিটির স্বপ্নের পথে বাধা ইন্টার

ক্রীড়া ডেস্ক

সিটির স্বপ্নের পথে বাধা ইন্টার

ম্যানচেস্টার সিটি-ইন্টার মিলান লড়াই। একদিকে আরলিং হলান্ড, কেভিন ডি ব্রুইন, বার্নার্ডো সিলভা, ইলকে গুন্ডোগানদের নিয়ে গড়া দুরন্ত এক দল। অপরদিকে ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাব ইন্টার মিলান। লাওতারো মার্টিনেজ, রোমেলু লুকাকো আর ইডেন জেকোরা মিলে বেশ শক্ত এক দল গড়েছে। একদিকে গতি, আক্রমণের কৌশল এবং ডিফেন্সে বিশ্বসেরা দল ম্যানসিটি। অন্যদিকে ইতালির চিরায়ত ডিফেন্স আর অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে ইন্টার মিলান। আজ রাত বাংলাদেশ সময় ১টায় তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ম্যানসিটি-ইন্টার মিলান। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করে ‘ট্রেবল মিশন’ সম্পন্ন করতে চায় ম্যানসিটি। চতুর্থবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ইন্টার মিলান।

ইউরোপে ট্রেবল (একই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ এবং কাপ) জেতা দল আছে সাতটি। স্কটল্যান্ডের সেলটিক (১৯৬৬-৬৭), নেদারল্যান্ডসের আয়াক্স (১৯৭১-৭২) ও পিএসভি এইনঢোফেন (১৯৮৭-৮৮), ইংল্যান্ডের ম্যানইউ (১৯৯৮-৯৯), স্পেনের বার্সেলোনা (২০০৮-০৯ ও ২০১৪-১৫), ইতালির ইন্টার মিলান (২০০৯-১০) এবং জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখ (২০১২-১৩ ও ২০১৯-২০) ট্রেবল জয় করেছে। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় দল হিসেবে ট্রেবল জয়ের গৌরব অর্জন করতে পারবে ম্যানসিটি! ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পর চলতি মৌসুমে তারা এফএ কাপও জয় করেছে। এবার বাকি কেবল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। জিতলেই ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে যাবে ম্যানসিটির নাম।

অতীতে ইন্টার মিলান ও ম্যানসিটি কখনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি হয়নি। প্রথম সাক্ষাতেই তারা খেলতে নামছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। ২০০৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয় এসি মিলান ও লিভারপুল। এ দুই দলও প্রথমবারের মতো পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল ফাইনালে। কাকতালীয়ভাবে সে ফাইনালটাও হয়েছিল ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। সেবার ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল হারিয়েছিল ইতালির এসি মিলানকে। এবারও কি ইংলিশদেরই জয় হবে!

♦ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছে ম্যানসিটি-ইন্টার।

♦ ইংলিশ ও ইতালিয়ান ক্লাব পঞ্চমবারের মতো ইউরোপিয়ান ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। এর আগে চারবার ফাইনালে লিভারপুল খেলেছে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান (২০০৫ ও ২০০৭) এবং রোমা (১৯৮৪) ও জুভেন্টাসের (১৯৮৫) সঙ্গে।

♦ ইন্টার মিলান ষষ্ঠবারের মতো ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলতে নামছে। এর আগে তারা ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৭, ১৯৭২ ও ২০১০ সালে ফাইনাল খেলেছে। এর মধ্যে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইন্টার।

♦ ম্যানসিটি এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফাইনাল খেলেছে একবারই (২০২১ সালে)। সেবার তারা ফাইনালে হেরে যায় চেলসির কাছে।

♦ ইউরোপিয়ান কোনো প্রতিযোগিতায় কেবল একবারই জয় পেয়েছে ম্যানসিটি। ১৯৭০ সালে কাপ উইনারস কাপ।

ফাইনালে ম্যানসিটির নরওয়েজিয়ান ফুটবলার আরলিং হলান্ডের দিকেই মনোযোগ থাকবে সবার। চলতি মৌসুমে তিনি এরই মধ্যে ৫২ গোল করেছেন। তাকে আটকানোই কঠিন হবে ইন্টার মিলানের জন্য। অবশ্য ম্যানসিটিতে আছেন কেভিন ডি ব্রুইন, বার্নার্ডো সিলভা এবং ইলকে গুন্ডোগানের মতো তারকা ফুটবলাররাও। ইন্টার মিলানে অবশ্য এত তারকার ছড়াছড়ি নেই। তবে আর্জেন্টিনার লাওতারো মার্টিনেজ, বসনিয়ার ইডেন জেকোরও দুর্দান্ত ফুটবল খেলছেন। জেকো ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর খেলেছেন ম্যানসিটিতে। দলটাকে ভালোভাবেই জানেন তিনি। তবে পেপ গার্ডিওলার ম্যানসিটি সম্পূর্ণ ভিন্ন লেভেলের ফুটবল খেলছে। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তারা কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে এবং সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েছে। অন্যদিকে ইন্টার মিলান কোয়ার্টার ফাইনালে বেনফিকা এবং সেমিফাইনালে এসি মিলানকে হারিয়েছে। দুটি দলই কঠিন লড়াই শেষ করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। কোনো একটা দলকে এককভাবে ফেবারিট বলা সত্যিই কঠিন। ম্যানসিটির মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন যেমন বলছেন, ‘আমরা এখনো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করিনি।’ সতর্ক থেকেই মাঠে নামছে ম্যানসিটি। অন্যদিকে ইন্টার মিলান ভয়হীন একটা ফাইনাল খেলতে চায়। দলটির কোচ ইনজাগি বলছেন, ‘আমরা একটা ফুটবল ম্যাচের বিষয়ে কথা বলছি। এখানে কোনো ভয় নেই।’

আজকের ম্যাচে খণ্ডযুদ্ধে দেখা যেতে পারে আরলিং হলান্ডকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ফ্রান্সেসকো অ্যাসারবি। মিডফিল্ডে কেভিন ডি ব্রুইনের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন এমখিটারিয়ান। এমনই আরও বেশ কিছু খণ্ডযুদ্ধ দেখার অপেক্ষায় থাকবেন ভক্তরা। বিশ্ব ক্লাব প্রতিযোগিতার সেরা লড়াইয়ে কী অপেক্ষা করছে তা সময়ই বলে দেবে।

সর্বশেষ খবর