প্রথম দুই ওয়ানডেতে সুযোগ পাননি খেলার। সাজঘরে বসে দেখেছেন দলের হার। টানা দুই ম্যাচ হেরে আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচটি ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মাচ। সেই ম্যাচে খেলতে নেমেই বাজিমাত করেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বিধ্বংসী বোলিংয়ে আফগানদের অল্প রানে গুটিয়ে তুলে নেয় সহজ জয়। হোয়াইটওয়াশ এড়ায় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে সাকিব আল হাসান, লিটন দাসরা গতকাল পা রাখেন পুণ্যভূমি সিলেটে। সেখানে শুরু হচ্ছে টাইগারদের টি-২০ মিশন। দুটি কুঁড়ি, একটি পাতার সিলেটে খেলবে দুই ম্যাচ টি-২০ সিরিজ। ১৪ ও ১৬ জুলাইয়ের ম্যাচ দুটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।
দুই ধাপে বাংলাদেশ সফরে আসে আফগানিস্তান। ঈদের আগে প্রথম ধাপে টেস্ট খেলেছে দুই দল। দ্বিতীয় ধাপে দুই দল খেলছে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ। টেস্টে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। লিটন দাসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেস্টে জয় পায় ৫৪৬ রানের আকাশসমান ব্যবধানে। জয়টি আবার ১৪৬ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম জয়। টেস্ট খেলে ফিরে যায় আফগানিস্তান। ঈদের পর রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, ফজলহক ফারুকি, মুজিব উর রহমানদের নিয়ে পূর্ণ শক্তির আফগানরা খেলতে আসে। অবশ্য বাংলাদেশও পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলছে। ফিরেছেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। পিঠের ইনজুরিতে টেস্ট খেলেননি তামিম। আঙুলের ইনজুরিতে খেলেননি সাকিব। দুজনেই ফেরেন ওয়ানডে সিরিজে। প্রথম ওয়ানডে খেলার পর পরের দুটি খেলেননি তামিম। প্রথম ওয়ানডেতে পারফরম্যান্স ভালো ছিল না টাইগার ওয়ানডে অধিনায়কের। ফিটনেস নিয়ে সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে হুট করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণায় চমকে দেন তামিম। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে যদিও পরের দিন অবসর প্রত্যাহার করে নেন। সাকিব ওয়ানডে সিরিজে খেলেছেন। এবার তিনি টি-২০ সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন।
টি-২০ ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানিস্তান অনেক বেশি শক্তিশালী। পরিসংখ্যানেও এগিয়ে। দুই দল এখন পর্যন্ত টি-২০ ম্যাচ খেলেছে ৯টি। আফগানিস্তানের জয় ৬ এবং বাংলাদেশের জয় ৩টিতে। দুই দেশ এবার নিয়ে পরস্পরের বিপক্ষে তৃতীয় সিরিজ খেলছে। দুই দল প্রথম টি-২০ ম্যাচ খেলে ৯ বছর আগে, ২০১৪ সালে। মিরপুরের ওই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৯ উইকেটে। সর্বশেষ মুখোমুখি হয় গত বছরের আগস্টে। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছিল আফগানিস্তান। গত বছর মার্চে তিন জাতির টুর্নামেন্টে দুই দল খেলে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়েছিল দুই ম্যাচে। দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছিল। দুই দেশ প্রথম সিরিজ খেলে ২০১৮ সালে। ভারতের দেহরাদুনে তিন ম্যাচের সিরিজটি আফগানিস্তান হোয়াইটওয়াশ করেছিল টাইগারদের। ম্যাচ তিনটি আফগানরা জিতেছিল ৪৫ রান, ৬ উইকেট ও ১ রানে। করোনার আগে ২০১৯ সালে দুই দেশ দুই ম্যাচের সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশে। মিরপুরে ২৫ রানে জিতেছিল আফগানিস্তান। চট্টগ্রামে ৪ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা আনে টাইগাররা।
সিলেটের উইকেটে বাউন্স অপেক্ষাকৃত বেশি। পেসারদের তুলনায় বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন স্পিনাররা। সিরিজে সাকিব বাহিনীর প্রতিপক্ষ হবেন দুই আফগান স্পিনার রশিদ ও মুজিব। দুজনেই ওয়ানডে সিরিজ জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। টাইগারদের বিপক্ষেও টি-২০ ম্যাচে দারুণ সফল দুই স্পিনার রশিদ ও মুজিব। দুজনে একত্রে উইকেট নিয়েছেন ২৭টি। টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিবের, ১১টি। সেরা বোলিং টাইগার বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের। তার স্পেল ৪-০-১০-৪।
টি-২০ সিরিজ দিয়েই শেষ হবে আফগানিস্তানের বাংলাদেশ সফর।