বিসিবির আগের কমিটি নামমাত্র মূল্যে পূর্বাচলে সাড়ে ৩৭ একর জমির বরাদ্দ নেয়। ২০৩১ সালের বিশ্বকাপ সামনে রেখে বরাদ্দকৃত জমিতে ‘দ্য বোট’ বা নৌকা আকৃতির একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির নকশা চূড়ান্ত করেছিল। এজন্য দেশি ও আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানও করেছিল। ২৯ আগস্ট ছিল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ১৫তম সভাপতি হন ফারুক আহমেদ। সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে ২৯ আগস্ট প্রথম সভায় পূর্বাচল স্টেডিয়ামটির দরপত্রসহ আগের নামও বাতিল করেন। বিসিবি সভাপতি গতকাল স্টেডিয়ামের জন্য বরাদ্দকৃত জমি পর্যবেক্ষণ করেন। পরিচালক আকরাম খান, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, খালেদ মাহমুদ সুজন, নাজমুল আবেদীন, ফাহিম সিনহা, কাজী ইনাম, মঞ্জুরুল ইসলাম ও সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী তাঁর সঙ্গে ছিলেন। মিডিয়ার মুখোমুখিতে স্টেডিয়ামের নকশা বদলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুটি খেলার মাঠ তৈরির কথা বলেন ফারুক আহমেদ, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের প্রধান ইচ্ছা ছিল মাঠগুলোর উন্নতি। নতুন মাঠ যদি করতে পারি, সেটা নিয়েও চিন্তা করছিলাম। যেহেতু এটা আমাদের নিজস্ব জায়গা, এটা নিয়ে একটা পরিকল্পনা ছিল। এখন এটাকে আমরা যত দ্রুত মাঠের কাঠামোয় রূপ দিতে পারি, সে চেষ্টা করব। যে মাঠগুলোর উন্নতি করার কথা, সেগুলোর সঙ্গে এখন এটা যোগ হবে।’
বিসিবির আগের কমিটি ‘পপুলাস’ নামে অস্ট্রেলিয়ান একটি প্রতিষ্ঠানকে স্টেডিয়াম নির্মাণের পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সম্ভব মাঠের কাজ শুরু করতে চান বিসিবি সভাপতি, ‘আগেই উল্লেখ করেছি, কনসালট্যান্সিতে আমাদের টাকা ইনভেস্ট হয়েছে। ওটাকে ধরে বড় কোনো পরিবর্তন না করে আপনি তো এক দিনে সব করতে পারবেন না। মাঠ, ড্রেসিংরুম আমি ওদের প্ল্যানটা পুরোপুরি দেখিনি। এটা নিয়ে আমার কথা বলাটাও ঠিক হবে না। ওই প্ল্যান দেখে, ড্রইং দেখে ওদের সাজেশন অনুযায়ী আমরা প্রথমে মাঠ করার চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশ টেস্ট খেলুড়ে দেশ। কিন্তু নিজস্ব কোনো স্টেডিয়াম নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) থেকে বরাদ্দ নেওয়া ছয়-সাতটি স্টেডিয়ামে ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বাচলে নিজস্ব একটি মাঠ তৈরি করতে চেয়েছিল আগের কমিটি। কিন্তু বিরাট অঙ্কের বাজেট থাকায় বর্তমান সভাপতিসহ পরিচালকরা চাইছেন না এত টাকা খরচ করে স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে। এর চেয়ে ক্রিকেট মাঠ তৈরি ও উন্নতির দিকে মনোযোগী হয়েছেন। গতকাল বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা ধাপে ধাপে যাব। এখানে দুটি মাঠ এবং বড় স্টেডিয়াম হওয়ার কথা ছিল। এ মুহূর্তে আমরা এত বাজেট অ্যাফোর্ড করতে পারব না। সেজন্য প্রথমে একটা মাঠ দিয়ে শুরু করব।’ মাঠের নকশা ও নাম নিয়ে ফারুক বলেন, ‘মাঠ করতে নৌকা বা স্কয়ার শেপের দরকার নেই। ওভাল দরকার।’