ইংল্যান্ড সিরিজের আগে অবসর না নিতে বিরাট কোহলিকে অনুরোধ করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। অনুরোধ করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকারও। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তেই স্থির থাকেন কোহলি। সাদা পোশাক ও লাল বলের ক্রিকেট আর খেলতে চান না ৩৭ বছর বয়সি এ ক্রিকেটার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে টেস্ট ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়ের কথা বলেন। দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটারের অবসরের মেসেজটি ছিল অনেক বেশি আবেগপূর্ণ ‘টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাগি ব্লু (ক্যাপ) মাথায় চাপানোর পর পেরিয়ে গেছে ১৪ বছর। সত্যি বলতে, কখনো কল্পনাও করতে পারিনি এ সংস্করণ এমন পথচলায় আমাকে এগিয়ে নেবে। এটা আমার পরীক্ষা নিয়েছে, আমাকে গড়ে দিয়েছে এবং শিক্ষা দিয়েছে, যা আমি বয়ে নেব আজীবন। সাদা পোশাকে খেলার ব্যাপারটি ছিল আমার হৃদয়ের একান্তই কাছাকাছি। নিঃশব্দে নিজেকে ভেঙে গড়া, দীর্ঘদিন এবং ছোট ছোট মুহূর্ত, যা কখনো কেউ দেখে না, কিন্তু নিজের সঙ্গে রয়ে যায় চিরদিন।’ কোহলি অবসর নিয়েছেন বন্ধু রোহিত শর্মার টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলার পাঁচ দিন পর। দুজনে মিলে ভারতের পক্ষে গত এক বছরে টি-২০ বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছেন। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছেন।
টি-২০ বিশ্বকাপ জিতে মাঠেই অবসরের ঘোষণা দেন কোহলি। বন্ধুর সিদ্ধান্তের পরপরই পোস্ট ম্যাচ কনফারেন্সে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন রোহিত। সাদা পোশাক ও লাল বলের খেলা থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে অনেক দিন ধরেই ভাবছিলেন। ১২৩ টেস্ট ক্যারিয়ারে রান করেছেন ৯২৩০। সেঞ্চুরি ৩০টি ও হাফ সেঞ্চুরি ৩১টি। অথচ সর্বশেষ তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন ৩৯ টেস্টে। এ সময়ে তার রানের গড় কমেছে। এখন গড় ৪৬.৮৫। এক সময় গড় ছিল ৫৭-৫৮। লম্বা ইনিংস খেলতে ক্লান্ত বোধ করায় তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন টেস্ট থেকে। অবসরের বার্তায় কোহলি আরও লিখেন, ‘এ সংস্করণ থেকে আমার এই সরে যাওয়া এটা সহজ নয়, তবে মনে হচ্ছে সঠিক। এখানে আমার সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি এবং এটা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু। কৃতজ্ঞতায় ভরা হৃদয় দিয়ে সরে যাচ্ছি আমি- খেলাটির প্রতি, মাঠে যাদের সঙ্গে নেমেছি তাদের প্রতি এবং প্রতিটি মানুষের জন্য এই পথচলায় যারা আমাকে স্বীকৃতির অনুভূতি দিয়েছে।’
২০১১ সালে কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক। সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে, সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক কোহলি। তার অধিনায়কত্বে ৬৮ টেস্টের ৪০টিতে জিতেছে ভারত। হেরেছে মাত্র ১৭ টেস্টে। সৌরভ গাঙ্গুলি ৪৯ টেস্টে ২১ জয় এবং ধোনি ৬০ টেস্টে ২৭ জয় পেয়েছে।