ক্রিকেটারদের সংগঠন বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল। নির্বাচনে ভোট দিতে এসে জাতীয় দলের বর্তমান, সাবেক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের মিলনমেলা বসেছিল। কোয়াবের নির্বাচনের আড়ালে বিসিবির নির্বাচন নিয়েই আলোচনাটা বেশি হয়েছে। বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে ক্রিকেটার অংশগ্রহণ অনেক বেশি। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে দেখা যাবে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বেশ কয়েকজন সাবেক অধিনায়ককে। নির্বাচনে যেন অধিনায়কদের মেলা বসবে। এর মধ্যে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, তামিম ইকবাল ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন করার। শোনা যাচ্ছে, বিসিবির সাবেক সভাপতি ও অধিনায়ক ফারুক আহমেদও নির্বাচন করবেন। খালেদ মাসুদ পাইলট ও খালেদ মাহমুদ সুজনের নামও জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। তবে বিসিবির বর্তমান পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান নির্বাচন করবেন না বলে তার নিকটজনরা জানিয়েছেন। সাবেক অধিনায়কদের মধ্যে বুলবুল ও তামিম বিসিবির সভাপতি পদে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন। ফারুক আহমেদও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। খালেদ মাসুদ পাইলট, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও খালেদ মাহমুদ সুজনকে পরিচালক পদে লড়াই করতে দেখা যাবে।
খালেদ মাহমুদের নাম শোনা গেলেও নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হচ্ছেন না। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন নির্বাচন করার আগ্রহ না থাকার কথা, ‘আমাকে অনেকেই অনুরোধ করেছেন নির্বাচন করতে। আমার আগ্রহ নেই। বোর্ডে ভালো ভালো সংগঠক আসুক। ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য কাজ করুক। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার অনেক বেশি রাজনৈতিক ব্যক্তির পদচারণা থাকবে।’ খালেদ মাহমুদ ২০২১ সালের ৬ অক্টোবরের নির্বাচনে ক্যাটাগরি-৩ থেকে নির্বাচন করে পরিচালক হয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিসিবির বর্তমান পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। ফাহিম এবার বিসিবির পরিচালক হয়েছেন জাতীয় পরিষদের কোটায় (এনএসসি)। খালেদ মাসুদ পাইলট নির্বাচন করেছিলেন ক্যাটাগরি-১-এর রাজশাহী বিভাগ ও জেলা অঞ্চল থেকে। হেরেছিলেন। এবারও একই ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করবেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে আকরাম ছাড়াও পরিচালক ছিলেন নাইমুর রহমান দুর্জয়। আওয়ামী সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন। এখন তিনি জেলে। আকরাম এখনো পরিচালক। তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, তিনি নির্বাচন করবেন না। যদিও এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি।
তামিম গতকাল কোয়াবের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, কোয়াবের সভাপতি হতে পারেন তিনি। কিন্তু তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি। না নেওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, ‘আপনারাও জানেন আমি কী কারণে কোয়াবের নির্বাচনে অংশ নেইনি। আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১৫-১৬ বছরে এটা দেখতে পারিনি। আজ এটা দেখে আমি নিজেও অনেক খুশি।’ বিসিবির নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন বলে কিছুদিন আগে মিডিয়াকে জানিয়েছেন। বিসিবির সভাপতি হতে চান তামিম। বিসিবির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলি আজগর লবি মিডিয়াকে জানিয়েছেন, তামিম তাদের মনোনীত। আমিনুল ইসলাম বুলবুলও বিসিবি সভাপতি পদে নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বুলবুল বিসিবির বর্তমান সভাপতি। সিলেটে তিনি জানান, বিসিবির সভাপতি হিসেবে কাজ করতে চান। এনএসসির কোটায় পরিচালক হয়েছেন তিনি। মিনহাজুল আবেদীন বিসিবির প্রতিনিধি হয়েছিলেন পাঁচ সাবেক অধিনায়কের কোটায়। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাবেক অধিনায়করা নির্বাচন করতে পারবেন না। এজন্য নান্নু প্রতিনিধি হতে চাচ্ছেন, ১০ ক্রিকেটারের কোটায়। তখনই নির্বাচন করতে পারবেন।
বিসিবির নির্বাচন অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। বিসিবি সভাপতি আজ-কালের মধ্যে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। এরপর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন। বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ ২৫ সদস্যের। ২৩ পরিচালক নির্বাচিত হবেন প্রতিনিধিদের ভোটে। দুই পরিচালক ক্রীড়া পরিষদের কোটায়। ২৩ পরিচালকের ১০ জন ক্যাটাগরি-১-এর জেলা ও বিভাগ থেকে। ১২ পরিচালক ক্যাটাগরি-২ বা ক্লাব প্রতিনিধিদের ভোটে এবং একজন পরিচালক নির্বাচিত হবেন ক্যাটাগরি-৩ বা সার্ভিসেস থেকে।