জার্মানির ভেলটিন অ্যারিনায় আট বছর আগে এক সন্ধ্যায় বিশ্বকাপে প্রথম গোল করেছিলেন বর্তমান ফুটবলসম্রাট লিওনেল মেসি। তখন তিনি উনিশ বছরের তরুণ। তারকাখ্যাতিও সবে ছড়াতে শুরু করেছে বিশ্বফুটবলে। এরপর কেটে গেছে আটটা বছর। অতীত হয়েছে দুটি বিশ্বকাপ। ফুটবলের মহান মঞ্চে গোলবার আর খুঁজে পাননি মেসি। গতকাল ছিল ২০০৬ বিশ্বকাপে সার্বিয়া অ্যান্ড মন্টিনিগ্রোর বিপক্ষে করা গোলটার আট বছরপূর্তি দিবস। আরও একটা দুর্দান্ত গোল দিয়ে দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর। রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে চোখ ঝলসানো আলোকমালা উপহার দিলেন তিনি। প্রায় মধ্যমাঠ থেকে বল পায়ে জড়ালেন মেসি। বসনিয়ান ডিফেন্ডারদের বৃত্ত ভাঙা যে তার জন্য নস্যি, তার দৃষ্টান্ত দিলেন। প্রায় পুরোটা সময় আমির স্পাহিচ, আরমিন বিকাকিচ এবং সিয়াদ কোলাসিনাচ ত্রয়ীর বৃত্তবন্দি ছিলেন মেসি। কিন্তু এই বৃত্ত ভাঙা যে কতটা সহজ তার প্রমাণ মেসি দিলেন ম্যাচের ৬৫ মিনিটে। মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে দৌড়ালেন। দুইবার পাস দিলেন ডি মারিয়া ও হিগুয়েনের কাছে। এরপরই এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। চারজন বসনিয়ান ডিফেন্ডারকে অবাক করে গোলরক্ষক আসমির বিগোভিচকে পরাস্ত করলেন মেসি। এরপর কি করলেন তিনি? বার্সেলোনার জার্সিতে গোল করে প্রায়ই দুই হাত উঁচিয়ে আকাশের দিকে তাকান মেসি। কিন্তু গতকাল দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। বল জালে জড়ানোর আগেই মেসি উদযাপন শুরু করলেন। তার গর্জন ছাপিয়ে গেল মারাকানায় উপস্থিত জনসমুদ্রের চিৎকারও! সতীর্থদের অভিনন্দন উপেক্ষা করে মেসি জার্সি টেনে নিজের শ্রেষ্ঠত্বই যেন প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন এক অশরীরী আবেগে! কোচ সাফেত সুসিচের ফুটবলসম্রাটকে রুখবার সব পরিকল্পনাই ভেস্তে গেল! এই একটা গোল মেসিকেই কেবল নয়, পুরো আর্জেন্টিনাকে এনে দিল স্বস্তি। ফুটবলসম্রাটের গোলটা যে বড় প্রয়োজন ছিল আলবেসিলেস্তদের। নেইমার আলো ছড়িয়েছেন। আলো ছড়িয়েছেন ডাচ তারকা আরিয়েন রোবেন ও ফন পার্সি। ফরাসি তারকা করিম বেনজেমাও পিছনে পড়ে থাকেননি। বাকি ছিলেন কেবল মেসিই। ব্রাজিল বিশ্বকাপের আকাশে এবার জ্বলতে শুরু করেছে মেসি নামক উজ্জ্বল তারকাও। ম্যাচ শেষে মেসি কি বলছেন? 'দ্বিতীয় গোলটা আমাদের সবার জন্যই ছিল স্বস্তির। কারণ, ম্যাচটা কঠিনতর হতে যাচ্ছিল। এটা আমার জন্যও বিশেষ কিছু। ম্যাচে গোল করার অনুভূতিটা ছিল দারুণ।'