মাঠের চেয়েও দুই স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে জোরালো লড়াই হয় মনস্তাত্তি্বকভাবে। তাই ম্যাচে মানসিকভাবে যারা এগিয়ে থাকে জয়ও তাদেরই হয়। বিশ্বকাপে গতকাল অকল্যান্ডে দুই স্বাগতিকের নাটকীয় লড়াই দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। এবারের আসরে যেখানে হর-হামেশা তিন শতাধিক রান হচ্ছে সেখানে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ১৫১ রান করেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ দিকে তো জয়ের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়েছিল অসিদের। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে এক উইকেটে জিতে যায় নিউজিল্যান্ড। টানা চার জয় নিয়ে প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল ব্লাক ক্যাপসরা। সেই সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাস্তাটাও পরিষ্কার করে রাখল।
গতকাল অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ১৫১ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে অসি বোলারদের শাসন করে এক উইকেট হারিয়ে মাত্র ৭ ওভারেই ৭০ রান করে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ২১ বলে দুরন্ত এক হাফ সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। কিউইদের জন্য ছিল তখন জয়টা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু এই অবস্থার পরেও পরাজয়ের আশঙ্কায় ভুগতে হয়েছিল ব্লাক ক্যাপসদের। একের পর এক দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়ায় শেষ দিকে নাটকীয় মুহূর্তের অবতারণা হয়েছিল। ১৩৯ থেকে ১৪৬, এই সাত রানের মধ্যে চার উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। তাদের সৌভাগ্য যে ওয়ান ডাউনে নামা উইলিয়ামসন তখনো উইকেটে ছিলেন। ৪২ বলে অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন।
মৃতপ্রায় ম্যাচেও প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছিলেন অসি বোলার মিচেল স্টার্ক। মাত্র ২৮ রানে তিনি নিয়েছেন ছয় উইকেট। অথচ অস্ট্রেলিয়ার প্রধান স্ট্রাইক বোলার ৬ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ৬৮ রান। প্রথম ইনিংসে আগুন ঝড়া বোলিং করেছেন কিউই বোলাররা। তাদের দাপুটে বোলিংয়ের জন্যই অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৫১ রানে। ২৭ রানে ৫ উইকেট নেওয়া ট্রেন্ট বোল্টই পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। মাইকেল ক্লার্কের প্রত্যাবর্তনটা ভালো হলো না মোটেও। ইনজুরির কারণে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ফিট থাকলেও বৃষ্টির কারণে খেলা পরিত্যক্ত হয়। আর এ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেরেই যায় তার দল। ১৯৯২ বিশ্বকাপে দুই স্বাগতিকের লড়াইয়েও জয় পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেবার জয় পেয়েছিল মার্টিন ক্রোর দল। এবার অস্ট্রেলিয়াকে হারালো ম্যাককালামের দল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ৯২ বিশ্বকাপের অধিনায়ক মার্টিন ক্রোকে এই ম্যাচের মধ্যবর্তী সময়ে আইসিসির 'হল অব ফেম'র স্মারক তুলে দেওয়া হয়।