প্রিমিয়ার লিগ ঘিরে হকিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গতবার মোহামেডান, মেরিনার্স দুই শীর্ষ ক্লাব ছাড়া ঐতিহ্যবাহী ওয়ারী ও বাংলাদেশ স্পোর্টিং হকির সব কর্মসূচি বয়কট করেছিল। তারপরও ক্লাব কাপ ও লিগ মাঠে গড়িয়েছিল। এবারও ফেডারেশন চাচ্ছে লিগ নামাতে। এ লক্ষ্যে তারা দলবদলের তারিখ ঘোষণা করেছে। কিন্তু যে অবস্থা তাতে অচলাবস্থা দূর হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এবার শুধু চার ক্লাব নয়, ঊষা ক্রীড়া চক্র ও ওয়ান্ডারার্সও বেঁকে বসেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊষার এক কর্মকর্তা বলেছেন, বড় দুই দল মোহামেডান ও মেরিনার্স মাঠে না ফিরলে তাদের লিগে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। কেননা ডোনাররা ফান্ড দিতে চাচ্ছেন না। তাদের কথা মোহামেডান ও মেরিনার্স না খেললে পয়সা খরচ করে শক্তিশালী দল গড়বো কেন? জনপ্রিয় আবাহনী এ ব্যাপারে এখনো কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি। কিন্তু দলের কোচ মাহবুব হারুন বলেছেন, লিগের আকর্ষণ বাড়াতে সব দলেরই প্রয়োজন রয়েছে।
সমস্যা নিরসন করতে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় গতকাল প্রিমিয়ার লিগে ক্লাবগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কীভাবে অচলাবস্থা দূর করা যায় সে ব্যাপারে কর্মকর্তাদের মতামত নেন। বৈঠকে উপস্থিত মেরিনার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান বলেন, উপমন্ত্রীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি আমরা হকি লিগ খেলতে চাই। কেননা খেলোয়াড়দের একমাত্র আয়ের উৎস এ লিগ। তাছাড়া নতুন নতুন খেলোয়াড়ের সন্ধান মিলে এখান থেকেই। সুতরাং লিগ শুরু করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাহলে কি আপনারা হকি লিগে অংশ নিচ্ছেন? রানা বলেন, অবশ্যই খেলব। তবে উপমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছি তার আগে আমাদের দাবি মানতে হবে। বর্তমান নির্বাহী কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি গড়লেই মাঠে ফিরব। দেখেন এই দাবি কিন্তু মূলত চার ক্লাবের ছিল। কিন্তু বৈঠকে উপমন্ত্রীর সামনে এ দাবি-দাওয়া তুলে ধরার পর কোনো ক্লাবই আপত্তি করেনি। বরং আবাহনী, ঊষা ছাড়াও অন্য ক্লাবের প্রতিনিধিরাও বলেছেন, সবাইকে নিয়ে লিগ হওয়া উচিত। উপমন্ত্রী কী দাবি পূরণের কোনো আশ্বাস দিয়েছেন? তিনিতো আর হুট করে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। তাই বলেছেন, হকির জন্য যা মঙ্গলময় তা তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন। রানা আশা প্রকাশ করেন হকির বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করে অ্যাডহক কমিটি গঠন হবে। নচেৎ হকিতে জটিলতা বেড়েই চলবে। মোহামেডানের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঞা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। মোহামেডানের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন প্রিন্স। সন্ধ্যায় লোকমান বলেন, বৈঠকে কি হয়েছে তা শুনেছি। আগেও বলেছি এখনো বলছি বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত না করলে আমাদের পক্ষে মাঠে নামা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এখন এ দাবি সব ক্লাবেরই। তাই আশা করি শীঘ্রই অ্যাডহক কমিটি গঠন হবে।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমত উল্লাহ গতকাল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাবের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা প্রস্তাব নয় কিছু ক্লাবের দাবি। উপমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসবেন। এখন কি সিদ্ধান্ত আসবে তাতো আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।