ক্রিকেটে বিশ্বকাপের পর দেশে পাকিস্তানিদের বিপক্ষে সিরিজ। সামনে আবার আরেক সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত আসছে। অর্থাৎ ক্রিকেটারদের ব্যস্ততার শেষ নেই। ফুটবলারদের বরাবরই একটা আক্ষেপ রয়েছে তারা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পান না। আসলেও মান উন্নয়নে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলাটা খুবই জরুরি। ফুটবল পিছিয়ে যাওয়ার পেছনে অনেকে দায়ী করেন ম্যাচ না খেলানোর জন্য। এতে করে মান যেমন বাড়ে তেমনি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়। যাক আগে যাই হোক না কেন, সাম্প্রতিককালে বাফুফে ফুটবলারদের জন্য বেশকিছু ম্যাচের ব্যবস্থা করেছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মাধ্যমে দেশে অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্য করলে দেখা যাবে কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার আগে প্রীতিম্যাচ খেলানো হচ্ছে। এশিয়ান গেমসে যাওয়ার আগে ঢাকা ও সিলেটে নেপালের বিপক্ষে দুটো ম্যাচ খেলানো হয়েছে। পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কা জাতীয় দল ও জাপান অনূর্ধ্ব ২৩ দল খেলে গেছে। সেক্ষেত্রে এখন ফুটবলারদের আক্ষেপ থাকার কথা নয়।
সামনে ক্রিকেটারদের মতো ফুটবলারদেরও ব্যস্ত সময় কাটাতে হবে। আগামী মাসেই ঢাকায় ২০১৮ বিশ্বকাপের বাচাই পর্বে কিরঘিস্থান ও তাজিকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে লড়বে। গ্রুপে জর্ডান ও এশিয়া চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াও রয়েছে। এ আসর চলবে আগামী মার্চ পর্যন্ত। এর মধ্যে ডিসেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও এশিয়া কাপ বাছাই পর্বও রয়েছে। তার আগে মালদ্বীপে একটি টুর্নামেন্টেও অংশ নেওয়ার কথা। লিগে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স দেখে প্রাথমিক স্কোয়াডও ঘোষণা করা হয়েছে। বাফুফে মূলত বছাই পর্বে প্রথম দুই ম্যাচকে গুরুত্ব দিচ্ছে। পেশাদার লিগের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পরই ক্যাম্প শুরু হয়ে যাবে। প্রস্তুতি দেখার জন্য সিঙ্গাপুর ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটো প্রীতিম্যাচেও অংশ নেবে জাতীয় দল। কোচ লোডডিক ক্রুইফ বলেছেন, বাছাই পর্বে শক্তিশালী গ্রুপ হলেও তার টার্গেট তিনে থাকা। খেলোয়াড়রা বলছেন, ঢাকাতে তারা কিরঘিস্তান ও তাজিকিস্তানকে হারানোর জন্য লড়বে।
যে প্রস্তুতি নিয়ে বাফুফে এগুতে চাচ্ছে তাতে কি বাছাইপর্বে ভালো কিছু করা সম্ভব? এ ব্যাপারে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ছাইদ হাছান কানন বলেন, ভালো লাগছে বাংলাদেশ অনেক দিন পর সরাসরি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছে। চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া সম্ভব নয় এটা সবারই জানা। কিন্তু বাফুফের উচিত ছিল গ্রুপে সম্মানজনক স্থানে থাকার সুযোগটা কাজে লাগানো। তিনি বলেন, ফুটবলে আমাদের যে মান, তাতে বড় কিছু আশা করা যায় না। বঙ্গবন্ধু কাপ ফাইনালে জাতীয় দল মালয়েশিয়া যুব দলের কাছে হেরেছে। সেখানে বাছাই পর্বে লড়তে হলে প্রস্তুতিটা দীর্ঘমেয়াদি হওয়া উচিত ছিল না? ফেডারেশন বলছে লিগের জন্য তা সম্ভব নয়। আজব কথা! বিশ্বকাপ বাছাই পর্বতো আর যেনতেন টুর্নামেন্ট নয়। বঙ্গবন্ধু কাপের পরইতো প্রস্তুতি নেওয়া যেত। ভালো যে খেলবে আমরা কি খেলোয়াড়দের সেভাবে তৈরি করতে পারছি। লিগে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বলে দিচ্ছে ফুটবলের করুণ পরিণতি। দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেললাম আর স্বল্পদিন ক্যাম্প চললো এতেই কি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের প্রস্তুতি হয়ে গেল। সালাউদ্দিন ভাই ২০২২ সাল বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখছেন। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বতো আর মহল্লার কোনো টুর্নামেন্ট নয়। এভাবে চললে কি স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব? জানি না কে কি ভাববেন, তারপরও বলছি ফুটবল ফেডারেশনের কাণ্ডজ্ঞান দেখে অবাক না হয়ে পারছি না। আসলে এভাবে ফুটবল চলে না।