স্মৃতির খাতায় চিরস্থায়ী হয়ে গেলেন কুমার সাঙ্গাকারা। আর কখনোই শ্রীলঙ্কার জার্সি গায়ে দেখা যাবে না এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে। দেখা যাবে না চোখ ধাঁধানো অফ ড্রাইভ, কাভার ড্রাইভ। কাল অতীত হয়ে গেলেন সাঙ্গাকারা। কলম্বো থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে একইভাবে স্মৃতির খাতায় নাম লেখালেন আরও এক কিংবদন্তি ক্রিকেটার। মাইকেল ক্লার্ক; যিনি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কও। গতকাল ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জীবনের শেষ টেস্ট খেললেন অসি অধিনায়ক। সিরিজ হারলেও মাইকেল ক্লার্কের বিদায় ঘটল জয় দিয়েই। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৪৮১ রানের জবাবে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয় মাত্র ১৪৯ রানে। ফলোঅনে নেমে চতুর্থদিন দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৬ রানে অলআউট হয়ে গেলে অস্ট্রেলিয়া পঞ্চম টেস্টে এক ইনিংস ৪৬ রানের ব্যবধানে জিতে যায়।
অ্যাসেজের আগেই কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে পড়েছিল ক্লার্কের বিদায়ের। তবে নিশ্চিত ছিল না, আদৌ ক্লার্ক সাদা পোশাকের খেলাটিকে বিদায় জানাবেন কি না? বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জানিয়েছিলেন, টেস্ট ক্রিকেটাকে আরও সময় দিতেই তিনি ওয়ানডেকে বিদায় জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে টেস্টকেও বিদায় জানাতে হবে, এমনটি বোধহয় ভাবেননি। কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন। তাই ফর্মে ফিরতে ব্যর্থ হলে সমালোচকরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন ক্লার্ককে। প্রতিপক্ষ বোলারদের সামলালেও পারেননি সমালোচকদের সঙ্গে। তাই ওভাল টেস্ট শুরুর আগেই জানিয়ে দেন, এটাই তার শেষ টেস্ট। এরপর আর কখনোই তাকে খেলতে দেখা যাবে না অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও পদত্যাগ করার জন্য তার উপর চাপ ছিল প্রতিনিয়ত। তখন তিনি ভেঙে পড়েনি। বরং দাপুটে ক্রিকেট খেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করান অস্ট্রেলিয়াকে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সংবাদ সন্মেলনে বোমা ফাটান। বিস্মিত করেন গোটা বিশ্বকে। কাউকে কোনোরকম ইঙ্গিত না দিয়ে অবসরের ঘোষণা দেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসটি ছিল অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার। এবার অবশ্য আগেভাগেই জানিয়ে রাখেন। শেষ ওয়ানডেতে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন। কিন্তু টেস্টে তার শেষ ইনিংসটি মাত্র ১৫ রানের। ব্যক্তিগতভাবে সাফল্য না পেলেও ওয়ানডের মতো টেস্টেও অস্ট্রেলিয়াকে জয়ী করেই মাঠ ছাড়লেন মাইকেল ক্লার্ক মাথা উঁচু করে। যদিও মর্যাদার অ্যাসেজ হেরেছে অস্ট্রেলিয়া তার অধিনায়কত্বেই।