ফুটবলে বন্ধ দুয়ার খুলতে শুরু করেছে। ক্রিকেটে শুধু বিজয়ের নিশানা উড়লেও ফুটবল যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই আসতে ছিল না। এ নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। এক সময়ে ফুটবলে জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকলেও পেশাদার লিগে গ্যালারি থাকছে প্রায় ফাঁকা। কোনো অবস্থায় ফুটবলে উন্নয়ন ঘটছিল না। অনেকে আক্ষেপ করে বলতেন, ফুটবল বেঁচে আছে লাইফ সাপোর্টে। যেকোনো সময় এর মৃত্যু ঘটতে পারে। না, অন্ধকারে বন্দী থাকা ফুটবলে আশার আলো জেগে উঠেছে। বড়রা না পারলেও কিশোররা অনেকদিন পর ফুটবলে শিরোপার মুখ দেখিয়েছে। সিলেটে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আগের দুই আসরে খালি হাতে ফিরলেও এবার নিজ দেশে কিশোর ফুটবলারদের পারফরম্যান্স দেখে দেশবাসী মুগ্ধ। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কা, ভারতকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। পরে আফগানিস্তানকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠে।
ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলতে নামে ভারত। গ্রুপ পর্বে জয় পেলেও ফাইনালকে ঘিরে দেশবাসী কিছুটা হলেও টেনশনে ছিলেন। শিরোপা ধরে রাখতে ভারত মরণ কামড় দেয় কিনা এ শঙ্কাটা সবার ভিতরে ছিল। না, কিশোররা প্রতিজ্ঞা করেই মাঠে নেমেছিল দেশকে শিরোপা উপহার দেবে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র থাকলেও টাইব্রেকারে জয়ী হয়ে বয়সভিত্তিক আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো শিরোপা এনে দেয়। এই সাফল্য ফুটবলকে উজ্জীবিত করে তুলে। নেপালে এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টে সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে। আজ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে। 'এ' গ্রুপের প্রথম ম্যাচে নেপাল ৩-১ গোলে ভুটানকে পরাজিত করে। তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে লড়তে হলে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। ড্র হলেই গোল পার্থক্যে নেপাল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে। ছোটরা শিরোপা জেতাতে বড়রা আত্দবিশ্বাস নিয়েই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু দল হিসেবে নেপালকে কোনোভাবেই দুর্বল বলা যাবে না। সিলেটে অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে ভারতের কাছে সেমিফাইনালে হেরে নেপাল বিদায় নেয়। তাই নিজেদের দেশে শিরোপা জিততে তাদের ভিতর বাড়তি জেদ কাজ করছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ সেরা খেলাটাই খেলতে চাইবে নেপাল। কিন্তু বাংলাদেশও জয়ের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে। কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ছেলেরা প্রথম ম্যাচ ভালোই খেলেছে। কিন্তু সহজ সহজ সুযোগ নষ্ট করায় ২-০ গোলে জয় নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তা না হলে আরও বড় ব্যবধানে জেতা যেত। তিনি বলেন, নেপাল অবশ্যই শক্তিশালী দল। বিশেষ করে তাদের আক্রমণভাগ বেশ শক্তিশালী। ম্যাচ জিততে ছেলেদের সেরা পারফরম্যান্স শো করতে হবে। অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখন অপেক্ষা অনূর্ধ্ব-১৯। টানা দুই শিরোপা জিতলে ফুটবলে সৃষ্টি হবে নতুন জোয়ার।