বিশ্বের আলোচিত টেনিস খেলোয়াড় সুইজারল্যান্ডের রজার ফেদেরার। জন্ম ১৯৮১ সালের ৮ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বাসেলে। রজার ১৭টি একক গ্র্যান্ড স্লামসহ ৯০ বার একক ও দ্বৈত শিরোপা জয় করেন। তিনি প্রথম টেনিস তারকা, যিনি খেলা থেকে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার হিসেবে আয় করেন।
রজারের জীবনের কিছু অজানা তথ্য তুলে ধরা হল :
টেনিসে সুইৎজারল্যান্ডের হয়ে খেলেন। কিন্তু তিনি দক্ষিণ আফ্রিকারও নাগরিক। কারণ বাবা সুইস হলেও তার মা দক্ষিণ অফ্রিকান।
টেনিসে খেলা শুরু করেন ছ’বছর বয়সে। কিন্তু বারো বছর পর্যন্ত চুটিয়ে ফুটবলও খেলতেন। অসম্ভব সম্ভাবনাময় ফুটবলার ছিলেন। এখনও ফুটবলের অসম্ভব ভক্ত। এফসি বাসেল ও এএস রোমার তার পছন্দের দুই ক্লাব।
টেনিসে তার প্রেরণা ছিলেন দু’জন। স্টেফান এডবার্গ ও বরিস বেকার। এডবার্গ তো তাকে দু’বছর কোচিংও করিয়েছেন।
সব সময় বলা হয়, তিনি প্রথম উইম্বলডন খেতাব জেতেন ২০০৩ সালে। সেটা ঠিক না। পাঁচ বছর আগে ১৯৯৮ সালে তিনি জুনিয়র উইম্বলডন জেতেন।
প্রথম উইম্বলডন খেতাব জেতার পরে সুইস ওপেনের সংগঠকেরা তাকে একটি গরু উপহার দেন। তিনি তার নাম দেন ‘জুলিয়েট’। ২০১৩ সালে আবার তাঁদের কাছ থেকে আর একটা গরু উপহার পান। এবার নাম দেন ‘ডিজাইরি’।
সুইৎজারল্যান্ডে যে কোনও নাগরিককে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয়। তিনিও দিয়েছিলেন। কিন্তু পিঠে ব্যথার জন্য তাকে বাহিনী থেকে বাতিল করা হয়।
স্ত্রী মিরোস্লাভা ওরফে মিরকাও সম্ভাবনাময় টেনিস প্লেয়ার ছিলেন। তাকে আবিষ্কার করেন মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। দু’হাজার সালে মিরকা ও রজার সুইৎজারল্যান্ডের হয়ে অলিম্পিক্সে নামেন। সেখানেই তাদের প্রেম। বিয়ে ২০০৯ সালে। চোটের জন্য মিরকা খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি।
সেবামূলক কাজে তাঁর অসীম উৎসাহ। তার টাইগার ফেডেরার ফাউন্ডেশন সমাজের অবহেলিত শিশুদের জন্য অবিরাম কাজ করে চলেছে। এছাড়া যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বার বার তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সে কাটরিনা হারিকেনের জন্য হোক বা ভারত মহাসাগরে ভূমিকম্প।
২০১৩ সালে তাকে অনুরোধ করা হয় ক্যান্সার আক্রান্ত সতেরো বছরের বিয়েত্রিজ টিনোকোকে সামনাসামনি অটোগ্রাফ দেওয়ার জন্য। শুধু অটোগ্রাফ না, তিনি তার সঙ্গে টেনিস খেলতে নেমে যান। ঘুরতে বেরোন। হোটেলে খাওয়ান। এবং টিনোকোকে ছেড়ে যাওয়ার সময় শিশুর মতো কেঁদে ফেলেন।
সাঁতার অসম্ভব ভালবাসেন। নিজের পরিবারই তার সব। ছুটিতে সব সময় স্ত্রী আর বাচ্চাদের নিয়েই থাকেন।
ভাল পিয়ানো বাজান। পিয়ানো বাজাতে পারলেও হার্ড রক ব্যান্ডের তিনি ভক্ত। পছন্দের ব্যান্ড এসিডিসি ও লেনি ক্রাভিটজ। কেউ কেউ বলেন, কঠিন ম্যাচের আগে তিনি এসিডিসি’র গান শুনে নিজেকে তরতাজা রাখেন।
অনেকে বলেন তিনি গানটা খুব খারাপ গান। তবে কেউ তাঁকে ‘কোরাওকে’ গাইতে বললে অবধারিতভাবে তিনি গান শেষ করবেন লেনি ক্রাভিটজ-এর ‘ফ্লাই অ্যাওয়ে’ দিয়ে।
এই মুহূর্তে তাঁর পাবলিক রিলেশনস ম্যানেজার হলেন তার স্ত্রী মিরকা। এবং সম্ভবত মিরকাই তার এক নম্বর সমর্থক। একবার তো গ্যালারিতে মিরকা এত চেঁচামেচি করছিলেন যে রজারের প্রতিদ্বন্দ্বী স্তান ওয়ারিঙ্কা সোজা আম্পায়ারের কাছে গিয়ে তার প্রতিবাদ করেন।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন