১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৮:১২

দারিদ্রতা বাধা হতে পারেনি বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার রকিবুলের

বাজিত হোসেন

দারিদ্রতা বাধা হতে পারেনি বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার রকিবুলের

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী যুব ক্রিকেটার রকিবুল হাসান। বিশ্বকাপের পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেছেন রকিবুল। বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়কও তিনি। কিন্তু এ সফলতার দ্বারপ্রান্তে উড়তে জীবনের সাথেও যুদ্ধ করতে হয়েছে রকিবুলকে।

রকিবুলের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম নগরবেড়া উত্তর বাঁশাটীতে। বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে গ্রামসহ পুরো উপজেলায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

খুবই সাধারণ পরিবারে জন্ম নেওয়া রকিবুল হাসানের গর্বিত পিতা শহীদ মিয়া একজন গাড়িচালক। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে রকিবুল দ্বিতীয়। বড়বোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, রকিবুল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আর তার ছোট ভাই পড়ে নবম শ্রেণিতে। 

দারিদ্রতাসহ কোনো কিছুই যেন বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি যুব এ ক্রিকেটারের। দরিদ্র বাবার আয় থেকে প্রাইভেটের যে টাকা দেওয়া হতো সেই টাকা থেকে বাঁচিয়ে ক্রিকেট অনুশীলনে খরচ করত এই যুব ক্রিকেটার। লেখা পড়ার চেয়ে খেলাধুলার প্রতি ছিল তার অতি আগ্রহ। পাড়ার বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতে করতে এক পর্যায় ঢাকার একটি ক্লাবের সাথে সংযুক্ত হয়। তারপর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক সফলতা আসতে থাকে তার ঝুলিতে। 

সর্বশেষ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে জয়সূচক রান করে নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন রকিবুল হাসান। ২৫ বলে ৯ রান যদিও তেমন কিছু নয়, কিন্তু দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে অধিনায়ক আকবর আলীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এই ক্রিকেটার। পুরো টুর্নামেন্টেই বল হাতেও দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন তিনি।

রকিবুল হাসানের ব্যাট থেকে বিজয় সূচক রান সংগ্রহের পর থেকেই তার নিজ গ্রামসহ সারা ফুলপুরে বইছে আনন্দের বন্যা। উপজেলা সদরসহ পাড়ায় পাড়ায় চলছে মিষ্টিমুখ ও আনন্দ উল্লাস।

বিশ্বকাপ জয়ের পর পরই উপজেলা চত্বরে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অনেকেই তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে অভিনন্দন জানান।

রকিবুলের গ্রামে বাড়িতে প্রায় পরিত্যক্ত একটি ছোট্ট টিনের ঘর, একটি রান্নার ঘর রয়েছে। বাড়িতে যাওয়ার রাস্তাটি প্রায় অকেজো। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। তবে বিশ্বকাপ জয়ের পর রকিবুলের গ্রামের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। 

এলাকাবাসী জানান, রকিবুলের বাবা ১৫ বছর ধরে ঢাকায় ভাড়া বাসায় থেকে গাড়ি চালান। তার এক ফুফু স্বামীসহ তাদের গ্রামের বাড়ি পাহারা দেন।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর