আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসে ডাক এসেছিল, তবে দেশকে সার্ভিস দিতে গিয়ে তার ভারতের বিমান ধরা হবে না। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে হবে, তাই বিসিবি তাসকিন আহমেদকে ছাড়পত্র দেয়নি। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম লিডার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, বাউন্সি উইকেটে তাসকিন গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাকে আইপিএলে খেলতে দিয়ে বিলাসিতা করতে পারবে না বাংলাদেশ।
রাবাদাসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে আইপিএলের জন্য টেস্ট দলে রাখতে পারেনি সাউথ আফ্রিকা। তবে বাংলাদেশের সামনে ইতিহাসের হাতছানি। ওয়ানডের পর টেস্টেও ভালো করতে চায়। তাই নিজেদের যক্ষের ধন তাসকিনকে লক্ষ্ণৌর হাতে সমর্পণ করতে পারেনি বিসিবি।
তাসকিনের ক্যারিয়ারে আইপিএল একটা বড় সুযোগ। কড়কড়ে রুপির সাথে প্রতাপ দেখানোর একটা মঞ্চও। তবুও দেশের জন্য তাসকিনকে সেই জৌলুসের আসর থেকে দূরে থাকতে হয়েছে।
তাসকিন কেনো গুরুত্বপূর্ণ তা প্রমাণ হতে খুব বেশি দিন লাগেনি। সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের কোণঠাসা করতে টাইগারদের মূল অস্ত্র হয়েছেন তাসকিন।
আজকের খেলার স্কোর কার্ড বলছে, তাসকিন এক অবারিত প্রশান্তি ধারা। পেস বান্ধব উইকেটে গতির সাথে সুইংয়ের খেলায় তিনি যে নান্দনিকতা দেখিয়েছেন, সত্যিই তা অবিশ্বাস্য। কেবল চোখের প্রশান্তি নয় অর্জনের ডালিতেও তাসকিন পুরে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট বা ফাইফার হওয়ার কৃতিত্ব। ওপেনার জানেমান মালান থেকে লোয়ার মিডল অর্ডারের ভরসা মারকুটে ডেভিড মিলারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন।
বাড়তি বাউন্সে বাংলাদেশি কোনো বোলার বিদেশি ব্যাটারকে ভড়কে দিচ্ছেন, এমনটা কল্পনা করাও এক সময় ছিলো উচ্চাভিলাস। তবে তাসকিন সেঞ্চুরিয়নে তেমনটাই করে দেখাচ্ছেন। মিলার তার এমন বলেই হয়েছেন কুপোকাত। তারপর জোহানেসবার্গের গোলাপি ওয়ানডের ফাইফার কাগিসো রাবাদাকে আউট করেই ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন তাসকিন।
২০১৯ বিশ্বকাপে ফিটনেস না থাকায় দলে জায়গা হয়নি। কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তাসকিন। তারপর দলেই হয়ে পড়েছিলেন অনিয়মিত। তারপর আবার সাধনায় বলে গতি বাড়ান তাসকিন। আগুনে হেঁটে করেন মন শক্ত। এরপর গতি বাড়িয়ে ফিরে আসেন, এখন অনায়াসে ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার বেশি তুলতে পারেন। সাথে সুইং আর বাউন্সেও ক্যারিশমা দেখাচ্ছেন তাসকিন। বাংলাদেশের পেস বিপ্লবের তরুণ তুর্কি অনায়াসে তাকেই বলা যায়...
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল