টেস্ট ক্রিকেটে সময়টা স্বপ্নের মতো কাটছে জনি বেয়ারস্টোর। ক্রিজে গেলেই ধরা দিচ্ছে রান। করছেন একের পর এক সেঞ্চুরি। তাকে থামানোর যেন কোনো পথই খুঁজে পাচ্ছে না প্রতিপক্ষ। চলতি বছর এরই মধ্যে ৬টি টেস্ট সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন বেয়ারস্টো। মাইকেল ভন, ডেনিস কম্পটন, জোর রুটের সঙ্গে যৌথভাবে যা ইংল্যান্ডের হয়ে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি শতকের রেকর্ড। কীর্তিটি নিজের একার করে নেওয়ার যথেষ্ট সময় আছে তার সামনে। আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনটি টেস্ট খেলবে ইংল্যান্ড। সব কিছু ঠিক থাকলে নিশ্চিতভাবেই একাদশে থাকবেন ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
গত জানুয়ারিতে অ্যাশেজের সিডনি টেস্টে এই বছরে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেন বেয়ারস্টো। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। শতকের দেখা পান নিজের পরের ম্যাচেও। মার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে করেন ১৪০ রান। এরপর কয়েকটি ম্যাচে পাননি কোনো ফিফটি। তবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেননি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নটিংহ্যাম টেস্টে ২৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় খেলেন ১৩৬ রানের ইনিংস। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৭৭ বলে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রেখে গড়েন ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। পরের ম্যাচে হেডিংলিতে উপহার দেন ১৬২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস।
সেখানেই থেমে যাননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ভারতের বিপক্ষে এজবাস্টন টেস্টে করেন জোড়া সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানের পর দলের রেকর্ড রান তাড়ার পথে ১১৪ রান করে থাকেন অপরাজিত। ক্যারিয়ারের প্রথম ৮৪ টেস্টে ৮ সেঞ্চুরি করা বেয়ারস্টোর সবশেষ ৫ ইনিংসে সেঞ্চুরি ৪টি। ২০০২ সালে ৬ সেঞ্চুরি করা ভন খুব ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারছেন এমন পরিস্থিতি কেমন অনুভব করছেন বেয়ারস্টো। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) নিজের কলামে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক সেটাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
মাইকেল ভন বলেন, জনি বেয়ারস্টো এখন যে ধারাবাহিক ছন্দে আছে, ব্যাটসম্যানরা তাদের ক্যারিয়ারে এমন সময়ের মধ্যে দিয়ে মাত্র একবার, দুইবারই যায়, যখন তারা নিজেদের প্রায় অপরাজেয় অনুভব করে। আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল ২০০২-০৩ মৌসুমে, যখন সবকিছু স্পষ্ট ছিল আমার কাছে এবং রান খুব সহজেই আসছিল। আমি ওই গ্রীষ্মে ভারতের বিপক্ষে অনেক রান করেছিলাম এবং ওই ফর্ম অ্যাশেজেও ধরে রেখেছিলাম। কিন্তু জনি এই মুহূর্তে যে ছন্দে আছে, আমি নিশ্চিত নই, আমার ফর্ম তার মতো এতটা ভালো ছিল কিনা।
নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করা সিরিজে বেয়ারস্টোর মতো দুটি সেঞ্চুরি উপহার দেন রুটও। পরে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু সব আলো যেন কেড়ে নেন বেয়ারস্টোই। ভনের মতে, এখানেই স্পষ্ট কতটা প্রভাব বিস্তার করছেন এই ব্যাটসম্যান। ভন বলেন, জনি কতটা ভালো খেলেছে তা বোঝা যায়, অন্য প্রান্তে যে একজন আছে, জো রুট, যে কিনা অনেক রান করেছে তবুও খুব কমই তার নাম এসেছে। আমার দেখা ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যানকে ছাপিয়ে যাচ্ছে সে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ