২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৪:৫৩

দীপ্তিকে প্রতারক বলে বিপাকে আসিফ

অনলাইন ডেস্ক

দীপ্তিকে প্রতারক বলে বিপাকে আসিফ

ফাইল ছবি

ক্রিকেট মাঠে মানকাডিং হয়েছে অথচ বিতর্ক হয়নি, এমন একটি ম্যাচও পাওয়া যাবে না। অবশ্য ক্রিকেট ইতিহাসে মানকাডিংয়ের ঘটনা হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটা। তবে এই গত সপ্তাহেই আইসিসি মানকাডিংকে বৈধ রান আউট বলে স্বীকৃত দিয়েছে। এর আগে মানকাডিংয়ে আউট হলেও সেটি আনফেয়ার হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই নিয়ম আর থাকছে না। অর্থাৎ খাতাকলমে মানকাডিং বলে কিছু থাকছে না। তবে মানকাডিং বিলুপ্তির আগে আবারো নতুন করে আলোচনায় এসেছে মানকাডিং আউট। এবারে মানকাডিং আউটের ঘটনা ঘটেছে মেয়েদের ক্রিকেটে।

গত শনিবার লর্ডসের ভারত ও ইংল্যান্ডের মেয়েদের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে ১৭০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছিল ইংল্যান্ড। ১১৮ রানে পড়ে যায় নবম উইকেট। শেষ সঙ্গী ফ্রেয়া ডেভিসকে নিয়ে তবু জয়ের দিকে ছুটছিলেন ডিন। শেষ ৭ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৭ রান, স্ট্রাইকে তখন ডেভিস। অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা ওভারের তৃতীয় বলটি করার মুহূর্তে ক্রিজ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়েন নন-স্ট্রাইকে থাকা ডিন। সুযোগ বুঝে বল ডেলিভারি না দিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন দীপ্তি, রান আউট ডিন। এর ফলে ১৬ রানে ম্যাচটি জিতে নেয় ভারত।

এই আউটকে অনেকেই দেখেন ক্রিকেটের চেতনার পরিপন্থী হিসেবে। ম্যাচের অমন সময়ে এমন একটি আউট মেনে নিতে পারেনি ইংল্যান্ডের মেয়েরা। ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যামি জোনস বিষয়টিকে ভালোভাবে না নেওয়ার কথা বলেছেন। ইংলিশ ক্রিকেটার স্যাম বিলিংস আবার একটু কড়া ভাষাতেই বলেছেন, এমন কেউ কি আছে যে ক্রিকেট খেলে কিন্তু এটাকে গ্রহনযোগ্য বলবে? এটা কখনোই ক্রিকেট হতে পারে না। অবশ্য ইংলিশ আরেক ক্রিকেটার এলেক্স হেলস দীপ্তির পক্ষই নিয়েছেন। এক টুইটারে তিনি বলেন, উইকেটের ভিতরে থাকা নিশ্চয় এমন কোনো কঠিন কাজ নয়।

বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে টুইটারে নিজের মত দিয়েছেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আসিফ। দীপ্তিকে তিনি ‘প্রতারক’ বলে অভিহিত করেছেন। এ মন্তব্য করে যেন ফেঁসে গেছেন স্পষ্ট ফিক্সিংয়ের দায়ে শাস্তি ভোগ করা পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার। তাকে নিয়ে সমানে ট্রল করা শুরু হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আসিফ তাঁর টুইটে লিখেছেন, আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, তার বোলিং করার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। সে নন–স্ট্রাইকার ব্যাটারকে প্রতারণা করার দিকেই মনোযোগী ছিল। এটা অন্যায্য এবং ভয়ংকর নেতিবাচকতা। আসিফের ওই টুইটের পর ভারতের ক্রিকেট–সমর্থকেরা বেজায় চটেছেন। এক টুইট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ফিক্সার বলছে চেতনার কথা, পরিহাসেরও সীমা থাকে।’

তবে এত আলোচনা সমালোচনার পরেও অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউরকে পাশে পেয়েছেন দীপ্তি শর্মা। ম্যাচ শেষে রান আউটটি নিয়ে করা প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘আমি তো মনে করেছিলাম প্রথম ৯ উইকেট নিয়ে জিজ্ঞাসা করবেন। ওই উইকেটগুলো নেওয়া তো সহজ ছিল না। আর এ ধরনের আউট আইসিসির আইনেই আছে। আমার তো মনে হয়, দীপ্তির করা এই আউট ব্যাটারদের আরও সচেতন করবে।

প্রসঙ্গত, মানকাডিং শব্দটা ক্রিকেটে প্রথম আসে ১৯৪৭ এর দিকে। সে বছরে অস্ট্রেলিয়ার বিল ব্রাউনকে এভাবে আউট করেছিলেন ভারতের ভিনু মানকড়। এরপর যখনই বল ডেলিভারির মুহূর্তে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া ব্যাটসম্যানকে আউট করার ঘটনা ঘটেছে, মানকাডের নাম এসেছে। মূলত ভিনু মানকড়ের নামেই মানকাডিংয়ের উদ্ভাবন। অনেকে এই আউটকে ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী দাবি করলেও, এর সাথে আইনের কোনো বিরোধ নেই। বরং এরকম আউটের সমালোচনা যারা করে- তারা কার্যত এই আইনেরই বিরোধীতা করছে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর