আগের দিন যেখানে শেষ করেছিল, তৃতীয় দিন সকালটা যেন সেখান থেকেই শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ছন্দটা ধরে রাখতে পারেনি সফরকারীরা। জেমি স্মিথ, জো রুট, ক্রিস ওকস ও বেন স্টোকসের চার ফিফটিতে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইংল্যান্ড। পরে শেষ বেলায় দুটি উইকেট নিয়ে এজবাস্টন টেস্টে বসেছে চালকের আসনে।
শনিবার (২৭ জুলাই) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৩। এখনও ৬১ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা। সফরকারীদের ২৮২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ৩৭৬ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। মিকাইল লুইস ৩৮ বলে ১ চারে খেলছেন ১৮ রানে। তার সঙ্গী আলিক আথানেজের রান ২৩ বলে ৫।
দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারে অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাট হাতে ভোগানোর পর ওকস দারুণ এক ডেলিভারিতে বিদায় করেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে। তিনে নেমে শুরু থেকে ভুগছিলেন কার্ক ম্যাকেঞ্জি। গাস অ্যাটকিনসনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে তিনি ধরা পড়েন স্মিথের হাতে।
এর আগে ইংল্যান্ডের ৯৪ রানের লিডে এই কিপার-ব্যাটসম্যানের অবদানই ছিল সবচেয়ে বেশি। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে তিনি খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ৯৫ রানের ইনিংস। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া ওকস খেলেন ৬২ রানের কার্যকর ইনিংস।
৩ উইকেটে ৩৮ রানে শনিবার খেলা শুরু করা ইংল্যান্ড দ্রুতই হারায় অলি পোপ ও হ্যারি ব্রুককে। ৫৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারা চলে যাওয়া স্বাগতিকরা প্রতিরোধ গড়ে রুট ও স্টোকসের জুটিতে। দুইজন মিলে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে সরিয়ে নেন সব চাপ।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর আলজারি জোসেফের আপাত সাদামাটা এক বাউন্সারে পুল করে ক্যাচ দেন স্টোকস। ভাঙে ১১৫ রানের জুটি। ইংলিশ অধিনায়ক ১ ছক্কা ও পাঁচ চারে ৬৯ বলে করেন ৫৪ রান। তার বিদায়ের কোনো প্রভাব দলের উপর পড়তে দেননি রুট ও স্মিথ। রানের গতি ধরে রেখে ৬২ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন দুজন।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১২ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শের পর বেশিক্ষণ টেকেননি রুট। গুডাকেশ মোটির একটু নিচু হওয়া ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন তিনি। তার ১২৪ বলে খেলা ৮৭ রানের ইনিংসটি গড়া ৭ চারে। তখনও ৫১ রানে এগিয়ে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের লিডের আশা গুঁড়িয়ে যায় স্মিথ ও ওকসের জুটিতে। ক্যারিবিয়ানদের হতাশায় ডুবিয়ে অষ্টম উইকেটে দুইজন গড়েন ১০৬ রানের বন্ধন।
মনে হচ্ছিল, ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েই যাবেন স্মিথ। তবে শামার জোসেফের একটু নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে থামেন তিনি। ১০৯ বলে খেলা তার ৯৫ রানের ইনিংস গড়া ১২ চার ও ১ ছক্কায়। পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি ওকস। আলজারি জোসেফকে দুই ছক্কা মেরে অ্যাটকিনসন ক্যাচ দিয়ে ৩৭৬ রানে থামে ইংল্যান্ড। ১২২ রানে ৪ উইকেট নেন আলজারি জোসেফ, ওভারপ্রতি দেন ৬.৯০ রান। জেডেন সিলস ৩ উইকেট নেন ৭৯ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৮২
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৮/৩) ৭৫.৪ ওভারে ৩৭৬ (পোপ ১০, রুট ৮৭, ব্রুক ২, স্টোকস ৫৪, স্মিথ ৯৫, ওকস ৬২, অ্যাটকিনসন ২১, বাশির ০*; আলজারি জোসেফ ১৭.৪-২-১২২-৪, সিলস ১৯-১-৭৯-৩, শামার জোসেফ ১৩-০-৬৩-২, হোল্ডার ৭-০-৩১-০, মোটি ১৯-২-৬১-১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৪ ওভারে ৩৩/২ (ব্র্যাথওয়েট ০, লুইস ১৮*, ম্যাকেঞ্জি ৮, অ্যাথানেজ ৫*; ওকস ৪-২-৮-১, অ্যাটকিনসন ৪-০-১৬-১, বাশির ৩-১-২-০, উড ৩-১-৬-০)
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ