দেশের ৪৬৭টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেষজ বাগান একটি। ভেষজ বাগান কর্মসূচি ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সেক্টর কর্মসূচির আওতায় এটি করা হয়। কিন্তু অযত্ন-অবহেলায় মরে যাচ্ছে গাছ, নষ্ট হচ্ছে সবুজে ঘেরা পরিবেশ।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২০ ফুট প্রস্থের এ ভেষজ বাগানটির অবস্থান হাসপাতাল ও কলেজ চত্বরের মাঝামাঝি জায়গায়। চারদিকে লোহার প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ভেষজ বাগানে ৫০ প্রজাতির গাছ লাগানোর কথা থাকলেও মাত্র ৩৫টি প্রজাতির স্থান হয়েছিল। বাকি ১৫টি প্রজাতি পরবর্তীতে রোপণের কথা ছিল। তার মধ্যে বেশকিছু মূল্যবান প্রজাতি অযত্ন-অবহেলার কারণে মারা গেছে। বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদের মধ্যে নাগেশ্বর আর যজ্ঞডুমুর/জগডুমুর আজও টিকে আছে। একটির অবস্থাও মৃতপ্রায়। যে প্রজাতিগুলো লাগানো হয়েছিল সেগুলো হলো- আগর, অর্জুন, হরীতকী, বহেড়া আমলকী, ভেরো, পুদিনা, চালতা, গোড়ানিম, জাতনিম, পেঁপে, বাসক, ভুঁইআমলা, লজ্জাবতী, মেহেদী, বেল, সর্পগন্ধা, ঘৃতকুমারী, শতমূলী, মৌরী, উলটচণ্ডাল, গোলমরিচ, বাবুই তুলসী, তেজপাতা, কালোমেঘ, অশোক, পিপুল বাদরলাঠি, নাগকেশর, কুরচি, শজিনা, শিমুল। বাকি যে প্রজাতিগুলো পরে লাগানোর তালিকায় ছিল- অনন্তমূল, অর্শগন্ধা, আসামলতা, তাকমাচি, গুলঞ্চ, জৈন/জোয়ান, তালমাখনা/কুলেখাড়া, বননীল, পুনর্নভা, ব্রাহ্মীশাক, ভৃঙ্গরাজ, মেথি ইত্যাদি।
মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল ক্যাম্পাসে যারা আসেন বিশেষ করে রিকশাওয়ালা, অটোওয়ালা, অসচেতন রোগীর লোকজন ভেষজ বাগানের চারদিকে মূত্র এমনকি মলত্যাগ করে পরিবেশ হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। এ পথ দিয়েই মেডিকেল ছাত্রছাত্রী ছাড়াও শিক্ষক, রোগী এবং সাধারণ মানুষ চলাচল করেন।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, আমার ছাত্রজীবন শেষে একদিন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে এলে দেখে মুগ্ধ হই। দেখতে দেখতে বাগানটির বয়স দুদশক অতিক্রান্ত হলেও অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে। আগে সাইনবোর্ড চোখে পড়লেও বেশ কয়েক বছর ধরে সেটাও সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে। লোহার প্রাচীরও কোনো কোনো জায়গায় ভেঙে গেছে।