চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সড়ক বাতির আধুনিকায়ন প্রকল্পটি বাতিল হয় গত বছরের ২ ডিসেম্বর। তবে চসিক প্রকল্পটি আবারও চালু করতে আগ্রহী। এ নিয়ে ২৭ জুলাই চসিক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেয়। এর আগে ২৪ জুলাই বাতিল হওয়া প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শনে এসেছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এস এম তারেক।
চসিকের চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রকল্পটি বাতিল করা হলে আইনগত, আর্থিক এবং কারিগরি ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে আছে- চুক্তির অন্তর্ভুক্ত পেমেন্ট আপন টার্মিনেশন’ শীর্ষক সাব ক্লাউস জিসিসি ৯৬.২ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো অনুযায়ী চসিককে বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তি লঙ্ঘনের কারণে চসিক তথা মন্ত্রণালয় বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সুনাম ক্ষুণ্ন হবে, বিশেষ করে চুক্তিটি যখন বিশ্বব্যাপী ব্যবসা পরিচালনাকারী একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা। আর প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হলে প্রকল্পটি বাতিল করা হলে সম্ভাব্য কারিগরি, আর্থিক এবং আইনগত ক্ষতির দিকগুলো পরিষ্কারভাবে বিশ্লেষণ করা যায়।’
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি বাতিল করার সময় চসিকের পক্ষ থেকে কোনো রকম মতামত চাওয়া হয়নি। ফলে বাতিলের কারণ সম্পর্কে চসিক অবগত নয়। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম নগরবাসী নানাভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক, নিরাপত্তা ও নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে পারতেন। বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
‘মডার্নাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন’ শীর্ষক ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একনেক সভায় অনুমোদন হয়। প্রকল্পে ঋণ হিসেবে ভারত ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকার অনুদান হিসেবে অর্থায়ন করার কথা ছিল। গত বছরের ৬ জুলাই চসিকের সঙ্গে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাপার্জি পালনজি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের চুক্তি হয়। কিন্তু গত বছরের ২ ডিসেম্বর প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি)-৩-এর আওতায় বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পের অধীন নগরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৬৬ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সড়কে ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি স্থাপন, শহরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪০, ৬০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি, ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল এবং ৫০৭টি কন্ট্রোল সুইচ বক্স বসানোর কথা। তাছাড়া পাঁচ মিটারের বেশি প্রশস্ত সড়কগুলোতে এসব বাতি লাগানো, হাইড্রোলিক বিম লিফটার ও ইলেকট্রিক্যাল ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করার কথা ছিল।