চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) হিসাবে নগরে মোট কোচিং সেন্টার আছে প্রায় ৪০০টি। কিন্তু এর মধ্যে চসিকের ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করেছে ১২০টি। ২৮০টি কোচিং সেন্টার লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালনা করা হচ্ছে। আবার অধিকাংশ লাইসেন্সই নবায়ন করা হয়নি। ফলে চসিক বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে। অনুমতিবিহীন কোচিং সেন্টারের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ডের কারণে নষ্ট হচ্ছে নগরের সৌন্দর্য।
এ নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর চসিকের সঙ্গে চট্টগ্রাম কোচিং অ্যাসোসিয়েশনের ‘নগরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে নগরজুড়ে বেআইনি পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন ধরনের দৃশ্য দূষণ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চসিক মেয়র বলেছিলেন, ‘কোচিং সেন্টার একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা খাত। তাই এটি অবশ্যই নীতিমালার আওতায় আসতে হবে। প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক। কোচিং সেন্টারগুলো ছাত্রদের থেকে ফি আদায় করে। এ জন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা আবশ্যক।’
চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সাব্বির রহমান সানি বলেন, নগরের চকবাজার, হালিশহর ও পাহাড়তলীকেন্দ্রিক অসংখ্য কোচিং সেন্টার গড়ে ওঠে। তবে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। প্রাথমিকভাবে ৪০০ আছে বলে মনে করি। এর মধ্যে অধিকাংশেরই ট্রেড লাইসেন্স নেই। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা অবৈধ। এ কারণে চসিক রাজস্ব হারাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে নগরের সৌন্দর্য। তাই এবার কোচিং সেন্টারগুলোকে শৃঙ্খলায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।
চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কোচিং সেন্টার চালুর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়। প্রতি বছর ফি দিয়ে তা নবায়ন করা বাধ্যতামূলক। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডসহ নানা খাতের জন্যও আলাদা ফি আছে। কিন্তু নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠানগুলো ট্রেড লাইসেন্স না নেওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে চসিক। সঙ্গে ভ্যাটও ফাঁকি দিচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলো। অন্যদিকে, অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়া ব্যানার-পোস্টার লাগালেও সেগুলো অপসারণ করে না। ফলে নষ্ট হয় নগরের সৌন্দর্য।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ এর ১১১ ধারা অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় নিবন্ধন ব্যতীত বেসরকারিভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টার চালু করা যায় না। নিবন্ধনের জন্য করপোরেশন কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত ফি জমা দিয়ে মেয়র বরাবর আবেদন করতে হয়। মেয়র বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় তদন্ত করে সন্তুষ্ট হলে সংশ্লিষ্ট টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টারকে নিবন্ধন করেন এবং ক্ষেত্র বিশেষে মাসিক ফি ধার্য করে দেন।