রাজশাহী শহরকে যানজটমুক্ত করতে ২১ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন বাস টার্মিনাল। কিন্তু সেখান থেকে যাত্রী উঠানো-নামানো করা হয় না। শহরের উত্তর প্রান্তে নওদাপাড়া এলাকার প্রায় সাড়ে সাত একর জায়গার এই বাস টার্মিনালটি শুধু গাড়ি রাখার কাজেই ব্যবহার করা হয়। আর যাত্রী ওঠা-নামা করা হয় শহরের শিরোইলের পুরোনো বাস টার্মিনাল এলাকাতেই।
এতে শহরের ভিতর যানজট লেগেই থাকে। নওদাপাড়ায় যেতে বাস মালিক ও শ্রমিকদের অজুহাত শেষই হচ্ছে না। রাজশাহী নগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান এস এম তুহিনুর আলম নিজেই নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পরিদর্শনে যান। এ সময় বাস মালিক ও শ্রমিকরা আবারও তাদের সামনে নানা অজুহাত তুলে ধরেন।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হেলাল বলেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য সরকার নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল নির্মাণ করেছে। কিন্তু টার্মিনালের সামনে গড়ে ওঠা দোকানগুলো যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি দাবি করেন, টার্মিনালে যাত্রীদের বসার জায়গা, চলাচলের সুব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শৌচাগার ঠিকভাবে চালু হয়নি। এসব সুবিধা না থাকলে যাত্রীরা কষ্ট পাবেন। তারা আসবেন না।
তিনি বলেন, শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় বাসের কাউন্টার আছে। নওদাপাড়ায় বাস টার্মিনালের সামনের জায়গাগুলোতে বিভিন্ন দোকানপাট হয়েছে। এগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। তারপর সেখানে তাদের কাউন্টার করে দিতে হবে। তাহলে তারা নওদাপাড়া আসবেন। বিষয়টি আরডিএ চেয়ারম্যানকে একাধিকবার বলার পরও কোনো কাজ হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ‘গত এক বছর ধরে আমরা চেষ্টা করছি যেন নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকেই এসব বাস যাত্রী ওঠানামা করে। কিন্তু তারা নানা অজুহাত দিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, পরিবহন মালিকদের সুবিধা দিতে আরডিএ বিভিন্ন অবকাঠামোগত কাজ করছে। আমরা স্পষ্ট বলেছি, দূরপাল্লার বাস কাউন্টার শহরের যে কোনো জায়গায় থাকতে পারে, কিন্তু যাত্রী ওঠা-নামা অবশ্যই নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকে করতে হবে।’ আরডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাস টার্মিনালটি আধুনিকীকরণের জন্য একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং দরপত্র প্রক্রিয়া এখন শেষ পর্যায়ে। টার্মিনালের সামনের দোকানগুলো ধীরে ধীরে অপসারণ করা হবে। একই সঙ্গে নতুন কাউন্টার, যাত্রী বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হবে।’