বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

যেভাবে ব্যবহার করবেন লিক্যুইড ফাউন্ডেশন

যেভাবে ব্যবহার করবেন লিক্যুইড ফাউন্ডেশন

মডেল : সানা পরী, ছবি : মনজু আলম

ফাউন্ডেশন একটি জাদুকরী প্রসাধনী পণ্য। যা ত্বকের খুঁত ঢাকতে ও কাক্সিক্ষত স্কিন টোন পেতে সাহায্য করে। একে আবার ত্রুটিহীন মেকআপের ভিত্তিও বলা হয়। তাই, প্রকৃতির মতো মেকআপ পেতে কীভাবে লিক্যুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন; সেটাও জানা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, সঠিক প্রসাধন এবং কৌশলই হলো নিখুঁত মেকআপের রহস্য।

ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে মুখের উজ্জ্বলতা বা দীপ্তি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এই ফাউন্ডেশনের সঠিক ব্যবহার না জানলে পড়তে হয় অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে। এর শেড যখন হালকা বা গাঢ় হয় তখন দেখতে বেমানান লাগে। তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা জরুরি। চলুন তবে আজ জেনে নেওয়া যাক ফাউন্ডেশন ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে।

 

যেভাবে লিক্যুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন

ত্বকে নিখুঁতভাবে ফাউন্ডেশন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজন হবে ক্লিনজার, ময়েশ্চারাইজার, প্রাইমার, কনসিলার, ফাউন্ডেশন ব্রাশ এবং স্পঞ্জ। প্রথমে মুখ ভালো করে ক্লিঞ্জার দিয়ে ধুয়ে নিন। ত্বকের জন্য উপযোগী এমন কোনো ময়েশ্চারাইজার লাগান। বৃত্তাকারে ম্যাসাজের মাধ্যমে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর মুখে প্রাইমার লাগান যাতে মুখের ত্বকের সব ছিদ্র ও ফাইন লাইনগুলো ভরাট হয়। প্রাইমার মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, ফাউন্ডেশনের জন্য মসৃণ ভিত্তি তৈরি করে এবং দাগ দূর করে। তারপরই আসে ফাউন্ডেশন লাগানোর পর্ব। আঙুলের মাথায় ফাউন্ডেশন নিয়ে সারা মুখে ফোঁটা ফোঁটা করে লাগান। তারপর একটি ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন ফাউন্ডেশন। ভেজা স্পঞ্জ ব্যবহার করার ফলে ত্বকে প্রয়োজনীয় ফাউন্ডেশন লাগার পর অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন শুষে নেবে স্পঞ্জ। ফাউন্ডেশন লাগানোর পরে মুখের দাগের জায়গাগুলোতে যেমন- চোখের নিচে, নাকের দুই পাশে, চিবুকের ওপরে ইত্যাদি স্থানে কন্সিলার লাগান। ফাউন্ডেশনের পরে কন্সিলার লাগানোর ক্ষেত্রে কম কন্সিলার ব্যবহার করলেই চলে। কন্সিলার হালকাভাবে লাগাবেন, খুব বেশি ঘষাঘষি করবেন না। এরপর একটি ব্রাশ দিয়ে হালকাভাবে পাউডার লাগিয়ে নিন অথবা সেটিং স্প্রে প্রয়োগ করে নিতে পারেন। ব্যস হয়ে গেল।

 

ব্রাশ দিয়ে লিকুইড ফাউন্ডেশন প্রয়োগ

ফাউন্ডেশন মেশানোর ব্রাশ পাওয়া যায়। এটি পরিষ্কার করার পরই ত্বকে ব্যবহার করা উচিত। জেনে রাখা ভালো, ফ্ল্যাট ফাউন্ডেশন ব্রাশ নিখুঁত মেকআপ দেবে সহজেই। মুখের মাঝখান থেকে ব্রাশ দিয়ে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করুন। ফাউন্ডেশনের ছায়া যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক হওয়া উচিত। অন্যথায় মেকআপ অস্বাভাবিক হবে।

 

ব্লেন্ডার ব্যবহার করে লিক্যুইড ফাউন্ডেশন

বিউটি ব্লেন্ডারে বিশ্ব এখন কাবু। ফাইন্ডেশন ব্যবহারে ব্লেন্ডার এনে দিয়েছে নিখুঁত মেকআপের ছোঁয়া। ডিমের আকৃতির স্পঞ্জটি ব্রাশের অন্যতম বিকল্প হিসেবে সমাদৃত। কেননা, ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর ব্রাশ দিয়ে ভালোভাবে মেশানো সম্ভব নয়। নিখুঁত করতে ব্লেন্ডার প্রয়োজন। কিছু সময় নিয়ে ব্লেন্ডার দিয়ে ফাউন্ডেশনটি মুখে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন।

 

স্পঞ্জ দিয়ে লিক্যুইড ফাউন্ডেশন প্রয়োগ

স্পঞ্জগুলো সাধারণত চৌকো এবং ওয়েজেসে কাটা হয়। আর হ্যাঁ, স্পঞ্জগুলো অবশ্যই স্যাঁতসেঁতে বা শুকনো ব্যবহার করতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে মেকআপ সেট করার জন্য সব সময় ডিম্বাকৃতির মেকআপ স্পঞ্জ নিন। এই আকৃতির ব্লেন্ডার ব্যবহার করলে মেকআপ ভালোভাবে সেট করা যায়। স্পঞ্জের ছোচালো প্রান্ত চোখের নিচে, ঠোঁটের কাছে ও নাকের পাশের মেকআপ ব্লেন্ড করে নিন।

আর হ্যাঁ, জানেন কি! সঠিক উপায়ে মেকআপ স্পঞ্জ বা বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহার করা না হলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এ জন্য রইল প্রয়োজনীয় টিপস...

♦ ফাউন্ডেশন গোলাপি ও হলুদ এই দুই টোনের হয়। তাই কেনার আগে ত্বক বুঝে কিনুন।

♦ ফাউন্ডেশন কেনার সময় বেশিরভাগ মানুষ যে ভুলটা করে থাকেন তা হচ্ছে, ফাউন্ডেশন হাতে লাগিয়ে এর রং যাচাই করেন। কিন্তু আমাদের মুখের ত্বকের চেয়ে হাতের ত্বক ভিন্ন ধরনের হয়। ফাউন্ডেশন যেহেতু একটি দামি পণ্য তাই এটি কেনার সময় যেন ভুল না হয়, তাই হাতে নয় চোয়ালে লাগিয়ে এর শেড পরীক্ষা করুন।

♦ তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা উচিত। না হলে দিন শেষে মুখের তেল বের হয়ে ফাউন্ডেশনকে চকচকে করে তুলবে।

♦ মেকআপ করার সময় ত্বক ও স্পঞ্জে সরাসরি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না। প্রথমে হাতের তালুতে পরিমাণমতো ফাউন্ডেশন নিন। এরপর স্পঞ্জের সাহায্যে একটু একটু করে নিয়ে মুখে লাগান। এতে ফাউন্ডেশন ও কন্সিলার ত্বকে ভালোভাবে ব্লেন্ড হয়ে যাবে।

♦ নোংরা স্পঞ্জ ব্যবহার করলে ত্বকে অ্যালার্জি ও ব্রণ হতে পারে। তাই মেকআপ করার পর হালকা গরম পানিতে স্পঞ্জ পরিষ্কার করুন। হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে স্পঞ্জ পরিষ্কার করতে হবে।

তথ্যসূত্র : স্টাইলক্রেজ

সর্বশেষ খবর