ত্বকের সমস্যার শেষ নেই। র্যাশ, ব্রণ- একের পর এক সমস্যা থাকে। আর এ ক্ষেত্রে ভরসা হয়ে ওঠে নানা ধরনের প্রসাধনী। যদিও এতে সুফল পাওয়া যায় না। কারণ প্রসাধনী শুধু ত্বকের বাহ্যিক দিকের খেয়াল রাখে। আর ত্বকের এই সমস্যাগুলো কোলাজেন কমে যাওয়ার কারণে হয়...
‘কোলাজেন’, মানবদেহের সবচেয়ে প্রাচুর্যপূর্ণ প্রোটিন। আর হবেই না কেন? এই উপাদান ত্বক, হাড়, টেন্ডন এবং লিগামেন্টের অত্যাবশ্যকীয় গঠন উপাদান হিসেবে কাজ করে। এ কারণেই ত্বকের সুস্থতায় কোলাজেন স্থিতিস্থাপকতা, আর্দ্রতা এবং সামগ্রিক ত্বকের অখণ্ডতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ত্বকের কোষগুলোয় শক্তিশালী জাল তৈরি করে, যা এমন একটি কাঠামোগত সহায়তা প্রদান করে থাকে। ফলে ত্বক প্রসারিত বা সংকুচিত হওয়ার পরেও তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এর সঠিক মাত্রা ত্বকে উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা আনে।
তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন স্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়। ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য খারাপ হতে শুরু করে। ফলে ত্বকের দৃঢ়তা, আর্দ্রতা এবং স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পায়। যা শেষ পর্যন্ত সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্য এবং চেহারার ওপর প্রভাব ফেলে। আজ আমরা জানব কীভাবে বুঝতে পারবেন আপনার ত্বকে কোলাজেনের অভাব আছে কি না!
♦ বলিরেখা এবং ত্বক ঝুলে যাওয়া কোলাজেনের মাত্রা হ্রাসের সুস্পষ্ট লক্ষণ। মূলত কোলাজেন উৎপাদন কম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক তার স্থিতিস্থাপকতা এবং দৃঢ়তা হারায়, যার ফলে গভীর বলিরেখা এবং ঝুলে যাওয়া ও বাধ্যর্ক্যরে (বয়স্ক চেহারা) সৃষ্টি করে।
♦ শুষ্কতা এবং ডিহাইড্রেশন (জলশূন্যতা) কোলাজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার সাধারণ লক্ষণ। কোলাজেন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা হ্রাস পায়, যার ফলে ত্বক শুষ্ক, টানটান এবং খসখসে হয়ে যায়, যা কোলাজেনের ময়েশ্চারাইজিং এবং ভরাট করার গুণাবলির জন্য ত্বকের তীব্র প্রয়োজনকে তুলে ধরে।
♦ কোলাজেন হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে মুখের ফ্যাট প্যাড এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পায়, যার ফলে গালগুলো ভিতরের দিকে দেবে যাওয়া এবং শীর্ণ দেখায়, যা ত্বক এবং অন্তর্নিহিত টিস্যুগুলোর ওপর কোলাজেনের অভাব প্রকাশ করে।
♦ স্থিতিস্থাপকতার অভাব কোলাজেন হারানোর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। কোলাজেন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক তার আগের অবস্থায় ফিরে আসার ক্ষমতা হারায়। ফলে ত্বক নিস্তেজ, নরম দেখায়। ঝুলে যাওয়া প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
♦ চোখের চারপাশে ফাঁপা ভাব কোলাজেন হ্রাসের একটি সূক্ষ্ম অথচ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। কোলাজেন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বক তার ভরাট ভাব এবং দৃঢ়তা হারায়, ফলাফল হিসেবে চেহারায় ফাঁপা এবং দেবে যাওয়ার মতো দৃশ্যমান হয়, যা সূক্ষ্ম রেখা, ডার্ক সার্কেল এবং এমন ফোলাভাবকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
♦ শরীরে কোলাজেন উৎপাদন কমে গেলে শরীরের ক্ষত শুকাতেও দেরি হয়। কেটে গেলে অনেক সময় তা সহজে শুকায় না। ডায়াবেটিস রোগীদের এই সমস্যা হয়। তবে ডায়াবেটিস না থাকলেও কোলাজেনের ঘাটতিও এর নেপথ্যে থাকতে পারে।