আজকাল চেরি ব্লসম জায়গা করে নিয়েছে রূপচর্চায়, বিশেষত- ‘ব্লাশ’ ব্যবহারে। যদিও এটি ভিনদেশি ফুল। তবে এটি কোমল, স্নিগ্ধ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার মাধ্যম
চেরি ব্লাশ ধারাটা কী?
চেরি ব্লাশ আদতে ব্লাশিংয়ের একটি কৌশল। দুটি ভিন্ন শেডের গোলাপি ব্লাশন ব্যবহার করে একটি ‘ওমব্রে’ বা স্তরভিত্তিক রংয়ের প্রভাব তৈরি করা হয়। এতে একদিকে যেমন ত্বকে লালচে আভা আসে, অন্যদিকে এটি মুখে আনে কোমলতা ও দীপ্তি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসাধনী ব্র্যান্ড ‘কেভিন অকোইন বিউটি’-এর প্রধান রূপসজ্জাকর ড্রিটা পালজেভিচ এক প্রতিবেদনে বলেন, ‘অন্যান্য ব্লাশ ট্রেন্ডের মতো এতে তীক্ষè বা জোরালো কনট্যুরিং নেই। বরং এটি মুখে কোমল এবং ‘টিনএজ’ দীপ্তি এনে দেয়।’ এই ট্রেন্ডকে সমর্থন করেন আরেক বিখ্যাত মেকআপ এক্সপার্ট ক্রিশ্চিয়ান ব্রিসেনো। তিনি বলেন, ‘এই ব্লাশ ট্রেন্ডে ‘আগে ত্বক, পরে রং’ নীতিতে কাজ করে। এটি সহজে করা যায়, নরম ও রোমান্টিক অনুভূতি আনে।’
এই ট্রেন্ড কেন জনপ্রিয়?
চেরি ব্লাশ এমন এক ‘লুক’ তৈরি করে, যা একদিকে স্বাভাবিক, অন্যদিকে শৈল্পিক। যেখানে অন্য ট্রেন্ডে মুখে খুব কড়া বা কনট্যুর করা রং থাকে, সেখানে এই ট্রেন্ডে রং থাকে হালকা ও নরম হয়। ড্রিটা পালজেভিচ বলেন, ‘এই ট্রেন্ড পছন্দের অন্যতম কারণ- এটি একাধিক ব্লাশ শেড ব্যবহার করে মুখে প্রাণ আনে। পেশাদার মেকআপ আর্টিস্টরা এটি নিয়মিত করেন। তবে সাধারণের মাঝে এটি বেশি পরিচিত নয়।’ এই লুক ঠোঁটে হালকা লিপ গ্লস, চোখে নরম আইলাইনার বা ‘ক্লাউড স্কিন’ মেকআপ স্টাইলের সঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশে যায়। অর্থাৎ আপনি যদি ‘ন্যাচারাল বিউটি লুক’ পছন্দ করেন, তাহলে এই ট্রেন্ড নিঃসন্দেহে উপযুক্ত।
যেভাবে চেরি ব্লাশ করবেন
১. প্রথমে একটি হালকা ও একটি উজ্জ্বল গোলাপি বা লাইলাক শেডের ব্লাশ বেছে নিন। ক্রিম, তরল বা জেল ফর্মুলার ব্লাশ সবচেয়ে ভালো কাজ করবে, কারণ এগুলো সহজে ব্লেন্ড হয়। ক্রিশ্চিয়ান ব্রিসেনো ও ড্রিটা পালজেভিচ একমত যে, একই ফর্মুলার দুই শেইড ব্যবহারে ভালো ফল দেয়।
২. হালকা শেডটি গালে, গালের ওপরের অংশে, কান ও কপালের মাঝামাঝি অংশে লাগান। এটি তুলনামূলক বেশি জায়গায় ও একটু বেশি পরিমাণে দিন, যাতে একটি স্বচ্ছ রংয়ের ছায়া (আবহ) তৈরি হয়।
৩. গালের যে অংশে হাসলে উঁচু হয়ে ওঠে (অ্যাপল অব দ্য চিক), সেখানে গাঢ় শেড লাগান। এখানেই রঙের মূল পয়েন্ট। এটা হতে পারে উজ্জ্বল গোলাপি বা হালকা চেরি রং। চাইলে নাকের ওপরেও সামান্য পরিমাণে লাগাতে পারেন, সূর্যের মতো উজ্জ্বলতা আনার জন্য।
৪. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো- দুটি রং এমনভাবে মিশিয়ে ফেলা, যাতে কোনো প্রান্ত বা সীমারেখা চোখে না পড়ে। যেন মনে হয়- রংটি গালের সঙ্গে মিশে গেছে, ধীরে ধীরে হালকা থেকে গাঢ় হয়েছে।
কাদের জন্য এই লুক?
যাদের ত্বক একটু হালকা বা মাঝারি, তাদের জন্য এটি খুবই কার্যকর। তবে বাদামি-গাঢ় ত্বকের অধিকারীদের ক্ষেত্রেও ঠান্ডা টোনের ‘ফিউশা’ বা ‘মভ শেইড’ বেছে নিলে মানিয়ে যাবে। যারা ‘মিনিমাল মেকআপ’ পছন্দ করেন বা প্রতিদিনের মেকআপে ভিন্নতা আনতে চান, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশের উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় হালকা মেকআপই উপযোগী। এই লুকটি গ্রীষ্মকালে একদিকে ত্বকে প্রাণ এনে দেয়, অন্যদিকে ভারি মেকআপের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়।
তথ্যসূত্র : ভোগ ম্যাগাজিন