মানুষের চাওয়ার শেষ নেই। তাই বলে যার টাকার অভাব নেই তারও কি চুরি করা সাজে? তারা হলিউডের অভিনেত্রী, সংগীতশিল্পী, উপস্থাপক। টাকা আর খ্যাতি কোনোটাই কম নেই। তবু চুরি করার দায়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন বারবার। আসলে পেশা নয়, চুরি তাদের নেশা। মনোচিকিৎসকরা বলছেন, সেলিব্রেটিদের চুরির অভ্যাস এক ধরনের মানসিক ব্যাধি
চুরির দায়ে দোকানে নিষিদ্ধ মেগান ফক্স
মেগান ফক্স। নাম, খ্যাতি কোনোটারই অভাব নেই। যেখানে ছোটেন, হাজারো ভক্তের সমাগম ঘটে। সবাই যেখানে তার প্রতীক্ষা করে সেখানে ব্যতিক্রম ফ্লোরিডার ওয়াল মার্ট। এখানে মেগান ফক্সকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ আর কিছুই নয়- চুরি। চুরির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় মেগান ফক্সকে এই দোকানে আসতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই মেগান ফক্সের এই চুরির অভ্যাস। যে কারণে ছোটবেলা থেকেই তাকে দুই-একটি চেইন সুপার স্টোর থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। সেটা তার পরিচিতজনরা যেমন স্বীকার করেছেন তেমনি করেছেন মেগান ফক্স নিজেও। উঠতি বয়সে মাত্র ৭ ডলারের এক লিপস্টিক চুরি করে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। পৃথিবীর অন্যতম আবেদনময়ী এই তারকার চুরির ঘটনা নিয়ে আলোড়ন ঘটে। তার ছোটবেলার চুরির ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তার বান্ধবী বলেন, মেগানের উঠতি বয়সে হাতটানের অভ্যাস গড়ে ওঠে। সে যেখানে যা পেত সেটাই চুরির চেষ্টা করত। তার পকেট ভর্তি থাকত চুরি করা চকলেট, চুইংগামে। ওয়ালমার্টে চুরির পর মেগানকে ধরার পরও সে চুরির কথা অস্বীকার করছিল। শেষ পর্যন্ত ভিডিও ক্যামেরার ছবি দেখানো হলে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে চুরির কথা স্বীকার করে।
গহনা চোর লিন্ডসে লোহান
লিন্ডসে লোহান। জুয়েলারি চুরির রানি বলা হয় তাকে। কতবার যে গহনা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন তার হিসাব রাখা মুশকিল। বিখ্যাত এল ম্যাগাজিনের ফটোশুট থেকে ৪ লাখ ডলারের জুয়েলারি চুরি যায়। আর এই ফ্যাশন ফটোশুটে উপস্থিত ছিলেন লোহান। অনেক খোঁজ লাগিয়ে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন, এই গহনাগুলো হয়তো লোহানই চুরি করেছেন। তারা লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশকে জানায়। যদিও তারা লোহানকে দোষারোপ করেনি কিন্তু লোহানের চুরির রেকর্ড তার দিকে অভিযোগ নিয়ে যায়। আরেকবার লস অ্যাঞ্জেলেসের এক জুয়েলারি দোকান থেকে গহনা পরেই সটকে পড়েন তিনি। সেবার বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। এ ছাড়া চুরির দায়ে অভিযুক্ত প্রমাণ হওয়ায় জেলও খেটেছেন লোহান।
লাইটার চোর ব্রিটনি স্পেয়ার্স
ব্রিটনি স্পেয়ার্স। গানের জাদুতে বিশ্ববাসীকে মাতিয়ে তোলা এই গায়িকা দুবার সরাসরি চুরির দায়ে অভিযুক্ত হন। আর দুবারই সেটি প্রমাণিত হয়। ব্রিটনি একবার মেকআপ রুম থেকে পরচুলা চুরি করে নিয়ে যান। পরে যখন কর্তৃপক্ষ সেই পরচুলা খুঁজতে শুরু করল সেটি মিলল ব্রিটনির কাছে। ব্রিটনি স্বীকার না করলেও তার চুরির দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধারণ ছিল। আরেকবার এক গ্যাস স্টেশন থেকে লাইটার চুরি করে ধরা পড়েন। ক্যালিফোর্নিয়ার স্যালম্যান অকস স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে ফেরার মুহূর্তে তিনি গ্যাস স্টেশনকর্মীর শৌখিন লাইটারটি হাতিয়ে নেন। এটি জানাজানি হলে পরে ব্রিটনি তাকে কিছু চুইংগাম উপহার দিয়ে অবস্থা সামলানোর চেষ্টা করেন।
পোশাক চোর রাইডার
উইনোনা রাইডারকে চেনেন না এমন মানুষ কমই আছেন। অপূর্ব সুন্দরী অভিনেত্রী খেতাবটা নিজের করে রেখেছেন তিনি। দর্শকদের মন ভুলানো এই তারকা অভিনেত্রী বেশ কয়েকবার চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ব্যাগে চুরিকৃত পোশাকসমেত বেভারলি হিলস পুলিশের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনি। সেবার তার ব্যাগে ছিল সাড়ে ৪ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের পোশাক। আর এই পোশাকগুলোতে স্টোর প্রাইস ট্যাগ তখনো লাগানো ছিল। এ জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। আরেকবার মাদক চুরি করে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন তিনি। সেবারও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ২০ হাজার ডলারের জামিনে মুক্তি পান। এক সাক্ষাৎকারে তার চুরির অভ্যাসের কথা স্বীকার করেন তিনি।
বাবলগাম চোর তিলা তেকুইলা
তিলা তেকুইলা। খ্যাতি পেয়েছেন গান লিখে, অভিনয় করে। সমালোচিত হয়েও স্টার বনে গেছেন পর্নোগ্রাফিতে কাজ করে। র্যাপার হিসেবেও তার নাম আছে। কিন্তু খ্যাতি আর টাকার পাহাড় থাকলে কী হবে, চুরির অভ্যাসটা রয়েই গেছে। ২০১০ সালে সিভিএসে চুরির দায়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন। কী এমন চুরি করেছিলেন জানলে লজ্জাটা আরও বাড়বে। কারণ সিভিএস স্টোরের এক দোকান থেকে চুইংগাম আর কিছু খাবার চুরি করেছিলেন তিনি। সেই বাবলগামের দাম ছিল মাত্র দুই ডলার। তাকে চুরির দায়ে ধরা হলেও পুলিশের হাতে না দিয়ে তাকে দাম পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। অবশেষে সমঝোতা হলেও চুরির খবর ছড়িয়ে যায় সর্বত্র।