এ বছর এক একর জমিতে ব্যাংক লোন করে সবজি চাষ করেছিলেন প্রজাপতি হাজং নামের এক কৃষক। জমিতে ভাল ফলনও হয়েছিল। বাজারে সবজি বিক্রিও শুরু করেছিলেন তিনি। সব সবজি বিক্রি শেষে ইচ্ছে ছিল ব্যাংক লোন পরিশোধ করবেন এবং অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাড়িতে একটি ঘর করবেন। গত বছর কিছু ইটও কিনে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয় প্রজাপতি হাজং এর। তার মতো আরও অনেকেই পথে বসেছে বন্যার কারণে।
প্রজাপতি হাজং এর বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামে।
জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার প্রধান উব্দাখালী নদীসহ সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এতে উপজেলার গ্রামীণ রাস্তা, আমন ধান ও বিভিন্ন শাক-সবজি পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দী হয়ে পড়েন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। এখন অবশ্য পানি অনেকটাই নেমে গেছে।
এ অবস্থায় বসুন্ধরা শুভসংঘ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রংছাতি ইউনিয়নের চন্দ্রডঙ্গা, বেদগড়া, হাতিবেড় এলাকায় ১০০ কৃষকদের মধ্যে লাউ, ডাটা, সিম, পুঁইশাক, মুলা, লাল শাকসহ বিভিন্ন প্রজাতির বীজ বিতরণ করে।
বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ উপজেলা শাখার সভাপতি মো. কামরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. রাজীব হোসেন, সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপক সরকার, রুবেল মিয়া, হানিফ হোসেন, শাহজাহান সাজু, নয়ন মিয়া, সুনিল মারাক প্রমুখ।
বসুন্ধরা শুভসংঘ উপজেলা শাখার সভাপতি মো. কামরুল হাসান বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ সবসময়ই বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা শুভসংঘ উদ্যোগে আমরা উপজেলা কমিটির লোকজন শতাধিক অসহায় কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতের বীজ প্রদান করছি। এতে কৃষকরা অনেক উপকৃত হয়েছে। আর এ শুভকাজে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরাও খুব আনন্দিত।
কলমাকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ শত হেক্টর জমিতে আমন ও ৩০০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষাবাদ করা হয়েছিল। তারমধ্যে ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর আমন ও ৭০ হেক্টর শাক-সবজি পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। বসুন্ধরা শুভসংঘ কর্তৃক কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে জীব প্রদান করায় কৃষকরা খুবই উপকৃত হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত