জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) মৌসুমী বন্যার ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার জন্য যমুনা নদীর অববাহিকার পাঁচটি জেলায় গবাদি পশু পালন করেন এমন বিপদাপন্ন পরিবারগুলোতে সাইলো এবং গবাদি পশুর খাদ্য বিতরণ করেছে।
এই বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের (যমুনা) বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠীতে আগাম সাড়াদানের মাধ্যমে জীবিকা-সম্পদ রক্ষা প্রকল্পের অংশ। উদ্যোগটি অর্থায়ন করেছে জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ)-এর সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড (সিইআরএফ) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) ও বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো জীবিকার সুরক্ষা প্রদান করা, বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর উপর জলবায়ু-ভিত্তিক দুর্যোগের প্রতিকূল প্রভাব হ্রাস করা এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি করা। প্রকল্পের অংশ হিসেবে এফএও প্রায় ৬০০০০০ মার্কিন ডলার বাজেটে পশুপালনের সাথে জড়িত ১৫১১০টি বিপদাপন্ন খামারি পরিবারকে বর্ষাকালে বন্যার সময়ে খাদ্যশস্য, বীজ, বিশুদ্ধ পানি এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পদের নিরাপদ সঞ্চয়ের জন্য জলরোধী সাইলো এবং ৫০ কিলোগ্রাম দানাদার গো-খাদ্য বিতরণ করেছে।
বন্যা চলাকালীন এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে, চারণভূমি প্লাবিত ও সঞ্চিত খাদ্য অনেক সময়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে পশু খাদ্য প্রাপ্যতায় সংকট দেখা দেয়। যার ফলস্বরূপ খামারিরা উল্লেখযোগ্য প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন এবং তাদের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যায়-দূষিত ভূমির ঘাস খাওয়ার জন্য বা স্থানীয় বাজারে পশু-খাদ্যের সংকটের কারণে ক্ষুদ্র খামারিরা বেশির ভাগ সময়ে খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না, ফলে গবাদি পশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিকল্প ব্যবস্থার অভাবে সাধারণত খামারিরা তাদের গবাদি পশু বা অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হয়। প্রায়শই, এই ধরনের নেতিবাচক কৌশল এবং পুঁজি হারানোর কারণে ভবিষ্যৎ উৎপাদনশীলতা ব্যাহত হয়। এই বিপদকালীন সময়ে সাইলো এবং গবাদি পশুর খাদ্য বিতরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই উদ্যোগ গবাদি পশুর অবিচ্ছিন্ন পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করে। সেই সাথে তাদের গবাদি পশুর স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলায় খামারিদের আরও প্রস্তুত করে তোলে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই