জয়পুরহাট এখন যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে। অফিস শুরুর সময় শহরের ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এ ছাড়া দীর্ঘ দিনেও রাস্তার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে কয়েক গুণ। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, শহরের যানজট নিরসনে কাজ চলছে। এক রাস্তার শহর জয়পুরহাট। জেলা শহরের প্রধান যানবাহন ব্যটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা। দিন দিন এর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসতে সাধারণ মানুষকে প্রবেশ মুখে যানজটে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে জয়পুরহাট শহরের প্রধান সড়কের বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে হাসপাতাল মোড়, সি ও কলোনি, আমতলী, বাটার মোড়, পাচুরমোড় রেলগেট মাছুয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার তীব্র যানজট হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছে শহরবাসী। এ ছাড়া শহরের মধ্যে যত্রতত্র অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল পার্কিং করার কারণে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। এতে সময় এবং ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এর নিরসন চান শহরবাসী।
শহরের মুসলিম নগর মহল্লার মিজানুর রহমান বলেন, যানজটের কারণে চলাচল করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। সকাল ১০টায় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসা থেকে বের হয়ে শহরে যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় উঠেছি। বাটারমোড়ে আসতে ৪০ মিনিট সময় লেগেছে। জরুরি কাজ করতে গেলে রাস্তায় বসে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এত অটোরিকশা শহরে চলাচল করছে প্রতিকারের জন্য কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
শহরের রিকশাচালক হাতেম আলী বলেন, পেটের দায়ে রিকশা চালাই। সড়কের যানজটের যে অবস্থা তাতে রিকশা চালিয়ে আগের মতো আয় হয় না। আগে সারাদিন আয় হতো ৮০০ টাকা। সেখানে বর্তমানে ৪০০ টাকা আয় হয়। পৌর এলাকার বাইরে থেকে পড়তে আসা স্কুল ছাত্র ইমন আলী, কলেজ ছাত্র নয়ন হোসেনসহ ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, ভালো মানের স্কুল কলেজ পৌর শহরের মধ্যে হওয়ায় আমরা এখানে পড়তে আসি। কিন্তু পৌরসভার মধ্যে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র যানজটে আটকে থাকতে হয়। যানজটের জন্য সময়মতো স্কুল-কলেজে যেতে দেরি হয়ে যায়। জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক জামিরুল ইসলাম বলেন, শহরে যানবাহনের ধারণ ক্ষমতা ১ হাজার। অথচ এর চার গুণ বেশি যানবাহন চলাচল করে। ফলে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ সাধ্যমতো কাজ করছে। পৌরসভার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পৌরসভা থেকেও ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তার জন্য কমিউনিটি পুলিশ কাজ করছে। পৌরসভায় বৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা রয়েছে ১ হাজার ১০০। অবৈধ যানবাহন শহরে যাতে না চলে সেজন্য অচিরেই অভিযান চালানো হবে।