নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও এক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন নারীসহ কমপক্ষে ২০। আন্দোলনকারীরা পুলিশের পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। রবিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলনকারী,পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে এ সংঘর্ষ হয়।
গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নড়াইল পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি আল নাহিয়ান প্রিন্স (৩৫)।প্রিন্স পৌরসভার আলাদাতপুর এলাকার আবু বক্কার মোল্যার ছেলে। অপর গুলিবিদ্ধ গোলাম রসুল খান (৭০) সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের নাকশী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি কৃষক। রসুল খান স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস খানের বড়ভাই।
জানা যায়, রবিবার সকাল থেকে নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের সদর উপজেলার মাদ্রাসা ও মালিবাগ এলাকায় হাজার হাজার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা জমায়েত হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে তারা শহর সংলগ্ন শেখ রাসেল সেতু হয়ে শহরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে সেতুর পূর্বপার্শ্বে গিয়ে অবস্থান নেয়।এরপর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছাত্র আন্দোলনকারীদের দিকে এগিয়ে যায়। বেঁধে যায় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও শর্টগান দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকে। ত্রিমুখী সংঘর্ষ চলাকালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আল নাহিয়ান প্রিন্স গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আকাশ ঘোষ রাহুল (২৫), রুপালী বেগম (৫০), সৌরভ রায় (৩৩), মাহমুদুল হাসানসহ (৩৪) কমপক্ষে ১৯ জন আহত হন। পরে দুপুরে মাদ্রাসা বাজার এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে
আগুন ধরিয়ে দেয় দুবৃর্ত্তরা। এ সময় ৩ পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ খবর পেয়ে শেখ রাসেল সেতুর পূর্ব পাশে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা মাদ্রাসা এলাকায় গিয়ে টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও শর্টগানের গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় বাড়িতে অবস্থান করা কৃষক গোলাম রসুল খান বুলেটবিদ্ধ হন। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তবে তারা কোথায় চিকিৎসা নিয়েছেন কিংবা ভর্তি হয়েছেন তা জানা যায়নি। শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি শেখ রিয়াজ মাহমুদ মিশাম জানান, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে জামায়াত-শিবিরের লোকজন হামলা চালালে প্রিন্স গুলিবিদ্ধ হন।
নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানান, ছাত্র আন্দোলনের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টাকালে পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ ১৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৬০ রাউন্ড টিয়ারশেলের গুলি বর্ষণ করা হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে আমাদের ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ