বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী নদী ও হাওর বেষ্টিত মৌলভীবাজার জেলায় চলতি বছরে বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও নদী ভাঙনের কারণে ৩য় ধাপে বন্যা দেখা দেয়। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন হাওর ও নদীর পারের দিন মজুর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। টানা ৩ য় ধাপের বন্যায় ভেঙে ক্ষতি হয়েছে তাদের বাশ বেতের তৈরি কাঁচা ঘড়।
আর্থিক সংকটের কারণে এখনও ঘর মেরামতে হিমশিম খাচ্ছে তরা, পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। তাদের দাবি সরকারিভাবে তাদের ঘর মেরামতে আর্থিক সহায়তা পেলে কিছুটা উপকার হয় তাদের। কিন্তু এখনও তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামতে সরকারি কিংবা বে-সরকারিভাবে কেউ কোন উদ্যোগ নেয়নি।
জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ৩য় ধাপে বন্যায় জেলার ২৪৩ কোটি ৪৯ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে হাওর পারের দিনমজুর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ১২ হাজার ২৯০টি কাঁচা ঘর আংশিক ও ৭৩৪টি ঘর সম্পূর্ণ রুপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার বড়লেখা উপজেলায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের পরিমান হল ৫ হাজারটি, জুড়িতে ৩ হাজার ৮৮৫টি, কুলাউড়ায় ৩ হাজার ৩১৬টি, রাজনগরে ৯৫টি, মৌলভীবাজার সদরে ৫০টি, কমলগঞ্জে ২৭টি, শ্রীমঙ্গ উপজেলায় ১৭টি। সম্পূর্ণরুপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওর পারের ৭ শত ৩৪টি কাঁচা ঘড়।
সরজমিনে কুশিয়ারা নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় তাহিদ আলী নামের এক দিনমজুরের টিনের ছাউনি ও বাশের বেড়া ধসে পড়েছে। তিনি আর্থিক সংকটের কারণে এখনও ঘড় মেরামত করতে পাড়ছেন না। এমন চিত্র রয়েছে ব্যয় ক্ষতিগ্রস্ত জেলার কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা এবং কমলগঞ্জন উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে।
এ সময় তাহিদ আলীসহ অনেকে বলেন, আমরা দিনমজুর, দিন এনে দিন খাই। আমাদের ঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর্থিক সংকটের কারণে। এখনও ঘর মেরামত করতে পাড়ছি না। সরকারিভাবে আমাদের সহায়তা করলে আমরা আনেক উপকৃত হতাম।
জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হয়েছে। তালিকাটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ আসলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল