বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ (বীরবিক্রম) বলেছেন, আমরা যেন আওয়ামী লীগ না হই। আমরা জিয়াউর রহমানের বিএনপি হয়ে থাকব। আমাদের দলের কেউ চাঁদাবাজি, দখলবাজি, দুর্নীতি করতে পারবে না। বিএনপি এসবের বিরুদ্ধে। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে গতকাল দুপুরে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের গণহত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনার বিচার ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা দল এই সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।
স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সমর্থন করি। আমরা এই বিপ্লবের একটি সঠিক পরিণতি চাই। আওয়ামী লীগের মতো কোনো কলঙ্ক যাতে তাদের স্পর্শ করতে না পারে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে মেজর হাফিজ বলেন, আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে কাজ করব। আমরা আওয়ামী লীগের মতো হতে চাই না। বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনার সেনা তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দীন আহমদ (বীরবিক্রম) বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তার নেতৃত্বে একটা ইনকোয়ারি হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ডের ঘটনা নিয়ে। তিনি সঠিকভাবে কারণ এবং সমাধান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই রিপোর্ট আলোর মুখ দেখে নাই। সেটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। মেজর হাফিজ ভারতকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আপনারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন। সেজন্য আমরা আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। কিন্তু আপনারা এ দেশের প্রভু হওয়ার কোনো চেষ্টা করবেন না। জনগণের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখবে।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, আবদুস সালাম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। মেজর (অব.) হাফিজউদ্দীন আহমদ বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। আর এখন মুক্তিযোদ্ধা এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ। এত মুক্তিযোদ্ধা এলো কীভাবে? তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা গত ১৫-১৭ বছরে ছাত্রলীগের মতো বক্তব্য দিয়েছেন। অবশেষে জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে তারা মানুষের জন্য কাজ করেছেন। পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এই ১৬ বছরে পুলিশ বাহিনী যে ভূমিকা রেখেছে, এটা পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম বাহিনী। পুলিশ বাহিনীর যেসব সদস্য মারা গেছেন (আন্দোলনে) এটার জন্য শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ দায়ী।