তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি (টিজিটিডিপিএলসি)-এর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে গত মঙ্গলবার পেট্রোসেন্টারে হামলা চালান টিজিটিডিপিএলসির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ঘটনায় সেদিনই তাৎক্ষণিক পেট্রোবাংলার চার কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জড়িতদের ১০ সেপ্টেম্বর পেট্রোবাংলা থেকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয় এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়। এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর পেট্রোবাংলার আওতাধীন টিজিটিডিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লি. (জিটিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজকে টিজিটিডিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার শাহনেওয়াজ পারভেজ তিতাসের দায়িত্ব গ্রহণ করতে গেলে সেখানে কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাঁকে যোগদানে বাধা দেন এবং লাঠিসোঁটা হাতে পেট্রোসেন্টারে হামলা চালান।
এ বিষয়ে গতকাল পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ ব্যাখ্যা দিয়েছে। এতে বলা হয়, পেট্রোবাংলার আওতাধীন কোনো কোম্পানিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদায়ন আইন অনুসারে পেট্রোবাংলার এখতিয়ার। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেই পেট্রোবাংলা তার আওতাধীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ বা পদায়ন করে। পেট্রোবাংলার ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, তিতাসের গ্রাহকদের হয়রানিমুক্ত করতে পেট্রোসেক্টরের একজন সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে শাহনেওয়াজ পারভেজকে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। পেট্রোবাংলার আওতাধীন কোম্পানিগুলোর মেধা তালিকায় ক্রমিক ৬৪ পর্যন্ত তিতাসের কোনো কর্মকর্তা না থাকায় তিতাস থেকে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তিতাসের একটি দুর্নীতিবাজ চক্র নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে দাবি আদায়ের নামে পেট্রোবাংলায় ভাঙচুর এবং পেট্রোবাংলার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করে। তারা জ্বালানি খাতে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং নিজেদের দুর্নীতি আড়াল করতে এ ধরনের কাজ করেছে বলে পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ মনে করে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নির্দেশে এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মঙ্গলবারের হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পেট্রোবাংলায় সংঘটিত ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পেট্রোবাংলার চার কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন মো. তারিকুল ইসলাম, উপমহাব্যবস্থাপক (অনুসন্ধান ও সমীক্ষা প্রকল্প), মো. আবদুল জলিল, উপমহাব্যবস্থাপক (সেবা), মো. ফজলুল হক, ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা কৌশল), মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, ব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার) ও মো. নজরুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী, প্রশাসন বিভাগ, পেট্রোবাংলা।