দেশের সংবিধান, বিচার, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ নানা খাত সংস্কারে ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধ এবং দেশ ও জাতির স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে কি না তা দেখা ওলামায়ে কেরামের দায়িত্ব। নতুন গঠিত প্রতিটি কমিশনে শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের স্বার্থ দেখার দায়িত্ব ওলামায়ে কেরামের। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ যেন গ্রহণ করা না হয় তা পর্যবেক্ষণ করা এবং সংবিধানসহ প্রতিটি কমিশনে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের অংশীদারি বহাল রাখা একটি কর্তব্য। গতকাল রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় ‘দেশ ও জাতির চলমান পরিস্থিতিতে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ সভায় শীর্ষস্থানীয় আলেমরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। সভায় বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ও হাইয়াতু উলিয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমূদুল হাসান বলেন, ‘ধর্মপ্রাণ মানুষ এখন ওলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফরমের জন্য অপেক্ষমাণ। আপনারা এবার বিচ্ছিন্ন না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকলে স্থায়ীভাবে জনগণের মনে স্থান করে নেওয়া সম্ভব হবে। রাষ্ট্রব্যবস্থায় নিখুঁত একটি শক্তি হিসেবে ইসলাম ও মুসলমানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।’
মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই) বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে ৫৩ বছরে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ আসেনি। ভিন্নমত তো থাকবেই, কিন্তু পরামর্শের ভিত্তিতেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এ সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের যে কোনো সৎ পরামর্শ আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত।’
মাওলানা এ কে এম আশরাফুল হক বলেন, ‘নেজামে ইসলাম পার্টি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে ঐক্যের মাইলফলক সৃষ্টি করেছিল। পরে আইডিয়াল ও ইত্তেহাদুল উম্মাহও প্রতিষ্ঠায় নেজামে ইসলাম পার্টি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল।’ আজকের দিনেও দেশ, জাতি ও উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের ছোটখাটো সব মতভেদ ভুলে তিনি ‘সম্মিলিত ইসলামী ফোরাম’ গঠনের প্রস্তাব করেন।
মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আগে সমমনা আকিদার ওলামায়ে কেরামের মধ্যে ঐক্য হতে হবে। পরে তাঁরাই নির্ধারণ করবেন কাদের সঙ্গে ঐক্য হওয়া উচিত।’
দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম আল্লামা মাহমূদুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হক রায়পুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল আওয়াল, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, বেফাকের সহসভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল কাদের প্রমুখ।