বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি বিমান দুর্ঘটনা ঘটে তার মধ্যে নেপাল অন্যতম। এখানকার আবহাওয়া এবং বিমানবন্দর এমন যে শুধু সেরা পাইলটরাই বিমান চালাতে পারেন। মাত্র এক বছর আগে নেপালে এক বড় বিমান দুর্ঘটনা ঘটে।
সবশেষ বুধবার দেশটিতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৮ আরোহী নিহত হলেও বেঁচে গেছেন একমাত্র পাইলট ক্যাপ্টেন মনিষ রত্ন শাকায়া। ককপিটটি উড়োজাহাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান তিনি। শাকায়া এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তিনি কথা বলতে পারছেন বলে বিবিসি নেপালি নিশ্চিত করেছে।
নেপাল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সুপারিনটেনডেন্ট দামবার বিশ্বকর্মা বলেন, ‘এয়ার শিল্ড খুলে যাওয়ায় তার (পাইলট) শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই তাকে জানালা ভেঙে দ্রুত বের করে আনা হয়। তার মুখমণ্ডল রক্তে মাখা ছিল। ওই অবস্থাতেই আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
রানওয়ের পূর্ব দিকে বিধ্বস্ত হওয়ার আগে উড়োজাহাজটি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের সময় আচমকা কীভাবে ডান দিকে মোড় নেয়, সেই বর্ণনা দেন নেপালের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী বাদ্রি পান্ডে । তিনি বলেন, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়ে নিচে পড়ার সময় বিমানবন্দরের প্রান্তে কনটেইনারে ধাক্কা খায়...এরপর এটি আরও নিচে পড়ে যায়। ককপিটটি কনটেইনারের ভেতরে আটকে গিয়েছিল। আর এভাবেই বেঁচে গেছেন পাইলট।
পান্ডে আরও বলেন, উড়োজাহাজের বাকি অংশ নিকটবর্তী ঢিবিতে আছড়ে পড়ে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। নেপাল সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, পাইলটকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে উদ্ধার করা হয়। তখনো তার জ্ঞান ছিল। এরপর সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের মেডিকেল পরিচালক মেনা থাপা বলেন, পাইলটের মাথা ও মুখে বেশ আঘাত লেগেছে। তার পিঠের হাড় ভেঙে যাওয়ায় দ্রুতই অস্ত্রোপচার করা হবে। থাপা বিবিসি নিউজ নেপালিকে বলেন, পাইলটের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতস্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাকে নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা পাইলটকে দেখতে হাসপাতালে যান। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত চলছে। ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের প্রধান নিরাউলা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে উড়োজাহাজটি ভুল দিকে যাচ্ছিল। এটি উড্ডয়ন করতেই ডান দিকে মোড় নেয়, অথচ এটির যাওয়ার কথা ছিল বাঁ দিকে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ